পোল্ট্রি শিল্পে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও তার গবেষক দল উদ্ভিজ্জ নির্যাস ভিত্তিক "BAUSafe-Vet" উদ্ভাবন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের সহায়তায় গবেষণাটি সাত বছর ধরে পরিচালিত হয়েছে। গবেষক দলে ছিলেন স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. আবু রায়হান পারভেজ, শাকিল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, তানভীর হাসান, নাজিবুল হক এবং আশরাফুল আলম।
ড. শফিকুল বলেন, "BAUSafe-Vet একটি উদ্ভিজ্জ নির্যাস যা পোল্ট্রি খাতে অ্যান্টিবায়োটিক-মুক্ত ব্রয়লার উৎপাদনে সহায়ক হতে পারে। নিম পাতার গ্রোথ প্রোমোটিং ইফেক্ট, ইমিউনো স্টিমুলেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান চিহ্নিত করে এটি তৈরি করা হয়েছে।"
তিনি জানান, গবেষণাটি পেটেন্ট করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং দিনাজপুর ও গাজীপুরে সফলভাবে ফিল্ড ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। ফলাফল অনুযায়ী, এই নির্যাস ব্যবহারে প্রতিটি ব্রয়লারের ওজন গড়ে ৩৫০-৫০০ গ্রাম পর্যন্ত বেড়েছে, যা তাদের মোট ওজনের প্রায় ৩০%।
সল্যুশনটির দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, "১০০ মুরগির জন্য প্রায় ২ লিটার সল্যুশন দরকার, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪০০০ টাকা। তবে মুরগির ওজন বৃদ্ধির ফলে খামারিরা কয়েকগুণ লাভবান হতে পারেন।"
এই গবেষণা ২০২৫ সালে বিএসভিইআর-এর বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে "High Performance Liquid Chromatography Analysis of Azadirachta in a Pathway to Drug Discovery for Safe Poultry Production in Bangladesh" শীর্ষক পোস্টার উপস্থাপনার জন্য পুরস্কার অর্জন করেছে।
অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, "এই উদ্ভাবন শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শিল্পেও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে সক্ষম। সফলভাবে বাজারে এলে এটি খামারিদের জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে উঠবে এবং বাংলাদেশের পোল্ট্রি খাতকে বিশ্ববাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করবে।"
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :