বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়(ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের অনুগত না হওয়ায় পাঁচ মাস আগে নিয়োগ দেওয়া গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের পরিচালককে অব্যাহতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে।
রবিবার (১৬ মার্চ) ববি রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক পদ থেকে কোস্টাল স্টাডিজ এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এবং একই নোটিশে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বর্তমান প্রক্টর ড. সনিয়া খান সনিকে নতুন পরিচালকের (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. হাফিজ আশরাফুল হক অভিযোগ করেছেন উপাচার্যের অনিয়মে সায় না দেওয়ায় তাকে নিয়োগের পাঁচ মাসেই অব্যাহতি দিয়েছেন উপাচার্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ মাস পূর্বে গত বছরের ২৭ অক্টোবর রেজিস্টার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসে ড. হাফিজ আশরাফুল হককে গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের পরিচালক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়।একই নোটিশে আরো দুই শিক্ষককে শারীরিক শিক্ষা অফিসের পরিচালক ও পরিবহন পুলের ম্যানেজারের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
একই নোটিশে তিনজনকে দায়িত্বপ্রদানের পাঁচ মাসের মাথায় হঠাৎ একজনকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক -শিক্ষার্থী মহলে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসে নতুম দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. সনিয়া খান উপাচার্যের আস্থাভাজন। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের মিথ্যা মামলার সাক্ষি হয়ে ইতোপূর্বে উপাচার্যকে খুশি করে প্রক্টরের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন সনিয়া খান। প্রক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে থেকেও গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে সোনিয়া খানকে বসানো হয়েছে। একটি অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সত্বেও তাকে নতুন আরো একটি অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করে উপাচার্যের অনুগত করার চেষ্টা করছেন উপাচার্য। আস্থাভাজন না হওয়ায় ও উপাচার্যের নিয়মবহির্ভূত সিদ্ধান্তে সায় না দেয়ায় ড.হাফিজ আশরাফুল হককে নিয়োগের পাঁচ মাসেই অব্যাহতি দিয়েছেন উপাচার্য।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড়মাস আগে, ড. হাফিজ আশরাফুল হকের থেকে উপাচার্য একটি চিঠিতে সাক্ষর নেন যেখানে উল্লেখ করা হয় গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের এলোকেশন ভাতা রেজিস্ট্রারের এখতিয়ারভুক্ত থাকবে।
জানা গেছে, গতকাল গবেষণা ও সম্প্রসারণ অফিসের গবেষণা প্রকল্প চূড়ান্তকরনের একটি মিটিংয়ের ১১ সদস্যের জন্য টিডিএ বিল ধার্য চেয়েছেন উপাচার্য ৮০ হাজার টাকা যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অফিস থেকে বিল পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব পাবার পরে ঐ শিক্ষককে উক্ত পদে পদায়ন করেন৷ কিন্তু এখন উপাচার্য ও তার অনুগতরা এমন সব খাতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় ও অনিয়মে সায় না দেওয়ায় ড. হাফিজকে অব্যাহতি দিয়েছেন উপাচার্য।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অব্যাহতি প্রাপ্ত পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক ড.হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়মকে প্রশ্রয় না দেওয়া এবং তার প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এটা উপাচার্যের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :