AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চুরির দায়ে কুবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ


Ekushey Sangbad
ওবায়দুল্লাহ,কুবি প্রতিনিধি
০৯:৫৭ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫

চুরির দায়ে কুবি শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ

চুরির অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আনাস আহমেদকে পুলিশে হস্তান্তর করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আনাস এবং একই শিক্ষাবর্ষ ও বিভাগের শামিম ভূঁইয়া কুমিল্লা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়। সেখান থেকে রাব্বি এলাহী নামক এক ফটোগ্রাফারের একটি ক্যামেরা লেন্স চুরির ঘটনা ঘটলে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে আনাস ও তার বন্ধুকে সন্দেহভাজন দাবি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন রাব্বি। পরবর্তী ফটোগ্রাফার রাব্বি এলাহী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার লোকজন নিয়ে এসে শহীদ ধীরেন্দ্রদত্ত হলের সামনে আনাসকে মারধর করে। আনাসের দাবি অনুযায়ী তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অর্ধ-উলঙ্গ করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি নেয় এবং সেটি মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে। পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী উভয়কে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি এবং প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে বিষয়টি যখন সমাধানের দিকে যাচ্ছিল, তখন মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন ক্যাপ্টেন পলাশ নামের একজন সেনাকর্মকর্তা বিষয়টি সমাধানের জন্য পুলিশ এবং প্রক্টরিয়াল বডিকে চাপ দেন। এ সময় রাব্বি এলাহী অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষিপ্ত হন। রাব্বির দাবি অনুযায়ী ক্যাপ্টেন পলাশ তার বন্ধু এবং ঢাকা সেনানিবাসে কর্মরত। পরে ক্যাপ্টেন পলাশকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন তার নাম পলাশ নয়, শাহীন তার কর্মস্থল বগুড়া সেনানিবাস। এটা জানার পর শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষিপ্র হন। তবে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিত থাকায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরবর্তী কুমিল্লা জেলা পুলিশের এএসপি মোস্তাইন বিল্লাহ ফেরদৌস এসে উত্তপ্ত শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করেন। রাতেই রাব্বি এলাহীসহ তার দুই সহযোগীকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।

এরপর আজ (২৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় চুরি হওয়া ক্যামেরা লেন্স উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি, আনাস চুরি করার বিষয়টি স্বীকার করে। এরপর পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় লেন্সটি মালিকদের কাছে হস্তান্তর করে এবং অভিযুক্ত আনাসকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করে। 

এবিষয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান রাহিম বলেন, ‍‍`গতকাল বহিরাগত কয়েকজন এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে মারধর করে এবং একটি মবের সৃষ্টি করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় পক্ষকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। বিষয়টি যখন সমাধানের পথে ছিল, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অভিযুক্ত আনাসের একটি অর্ধনগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় তাকে মারধর করা হচ্ছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর উপস্থিত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় অভিযুক্তদের নিরাপদে বের করে দিই। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় হারিয়ে যাওয়া লেন্স উদ্ধার করে পুলিশ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একইসাথে অভিযুক্ত আনাসকেও পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।‍‍`

লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মু. ওসমান গনি বলেন, ‍‍`আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কখনোই একজন চোরের পক্ষে ছিলাম না, ভবিষ্যতেও থাকবো না। আজ তিনি (আনাস) স্বীকার করেছেন যে তিনি এবং তার বন্ধু শামীম চুরির সাথে জড়িত ছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ তাকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছি। এছাড়াও, তার বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ রয়েছে। আমাদের দাবি, চুরির সাথে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে।‍‍`

তিনি আরও বলেন, ‍‍`আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যারা ক্যাম্পাসে মাদকের সাথে জড়িত, তাদের শনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।‍‍`

অভিযুক্ত শামিমকে পুলিশে হস্তান্তর কেন করা হয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নাঈম ভূঁইয়া বলেন, ‍‍`আনাসের দেওয়া লোকেশন থেকে লেন্স পাওয়া গেছে কিন্তু শামিমকে পাওয়া যায়নি। যার জন্য তাকে পুলিশে সপোর্দ করা সম্ভব হয়নি।‍‍` 

এছাড়া, শামিমের মুঠোফোনে কল দিয়ে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম বলেন, ‍‍`আমরা চাই না যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী চুরির মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকুক। যেহেতু অভিযুক্তদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তাই আমরা আগামীকাল শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করব। এরপর ২৮ তারিখ সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।‍‍`

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, ‍‍`বাদী পক্ষ যদি কোনো ধরনের অভিযোগ করেন তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। অভিযুক্ত এখনো থানা হেফাজতে রয়েছে।‍‍`


 

একুশে সংবাদ//কুবি.প্র//এ.জে

Shwapno

সর্বোচ্চ পঠিত - ক্যাম্পাস

Link copied!