উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মাসব্যাপী বিশেষ অভিযানের তৃতীয় দিনে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘পেট্রোবাংলা একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এর নিচেও মশার চাষ হচ্ছে। এর বেজমেন্টের নিচে যেখানে ড্রেনের কাজ হচ্ছে, সেখানে আমি মশার লার্ভা দেখতে পেয়েছি। এর আগে জাহাঙ্গীর টাওয়ারে গেলাম সেখানেও মশার লার্ভা দেখতে পেয়েছি।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সোমবার (১০ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় তৃতীয় দিনের মতো মশকনিধন অভিযান চালানোর সময়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া খুবই দুঃখজনক এবং অত্যন্ত হতাশাজনক। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সবার সঙ্গে মিটিং হয়েছে, তারা বলেছে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু এই দায়িত্ব পালন শুধু মুখে মুখেই, বাস্তবে কেউ দায়িত্ব পালন করছে না। দায়িত্ব পালন করলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে মশার লার্ভা পেতাম না।’
তিনি বলেন, ‘আজ পেট্রোবাংলাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা তো করতে হতো না, যদি তারা ন্যূনতম দায়িত্ব নিত। একটু ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিলেই তো হয়ে যায়। সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। এই দায়িত্ব শুধু সিটি করপোরেশনের ওপর দিলে হবে না। আমি মনে করি, এই শহর আমাদের সবার। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা বরং ফাইন না দিয়ে এগিয়ে আসুন।’
তিন দিনে এক দিন জমা পানি ফেলে দিন- এই স্লোগানের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘সরকারি, বেসরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান সবাইকে অনুরোধ করব, যার যার অঙ্গন নিজেরা পরিষ্কার রাখি। আসুন আমরা নিজেরা বাঁচি এবং অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করি।’
বেলা ১১টায় ডেঙ্গুবিরোধী অভিযানে কারওয়ান বাজারে জাহাঙ্গীর টাওয়ারে মশার লার্ভা পেলে ভবন কর্তৃপক্ষ অফিস রুম তালা দিয়ে অন্য কোথাও চলে যায়। পরে মেয়র সেই তালার ওপর নতুন করে আরেকটি তালা লাগিয়ে দেন।
এরপর পেট্রোবাংলায় যান মেয়র। সেখানে মশার লার্ভা পেয়ে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেন। পরে যমুনা ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানেও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। ভবন মালিককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
পরবর্তী সময়ে টিসিবি ভবনের বেজমেন্টেও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। পরে টিসিবি ভবন কর্তৃপক্ষকেও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘আমাদের বেজমেন্টের নিচে ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে। আমরা অনেক সতর্ক ছিলাম। যদি কাজ করা অবস্থায় এখানে মশার লার্ভা পাওয়া যায়, তাহলে এটা কনট্রাক্টরের দোষ। আসল দোষ যার, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যদি তা প্রমাণ হয় তাহলে এই পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা তাদের থেকে আদায় করা হবে। অথবা আমাদের চাকরিবিধি অনুসারে জরিমানা দেওয়া হবে।’
অভিযানের তৃতীয় দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের সবগুলোতে অভিযান পরিচালনা করেছেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটেরা।
ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় মশক নিধন অভিযান এবং জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নেন ডিএনসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ আমিরুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোতাকাব্বির আহমেদ, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এসএম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ ডিএনসিসির অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :