রোববার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। নির্বাচনের দিন সাধারণ ছুটি থাকায় দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এরইমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ফলে শুক্র, শনি ও রবি; টানা এই তিন দিনের ছুটি ও পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে রাজধানী ছাড়ছেন সাধারণ ভোটাররা।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) শেষ কর্মদিবসে দুপুর থেকেই রাজধানীর বাস, ট্রেন ও লঞ্চঘাটে যাত্রীর ভিড় বেড়েছে। চাপ থাকলেও ঝামেলাবিহীনভাবেই রাজধানী ছাড়ছেন সাধারণ মানুষ।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গগামী বাসগুলোতে সাধারণ মানুষের ভিড় অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। ভিড় রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী বাস কাউন্টারগুলোতেও।
রাজধানীর মিরপুর এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেন্টু নামের একজন বলেন, টানা তিন দিনের ছুটি পেয়েছি। ভোট দিতে বাড়ি যাব। কাজ কম থাকায় বৃহস্পতিবার একটু আগেই অফিস থেকে বের হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে আমার বউ-বাচ্চা। তাদের কাছে প্রার্থীরা বারবার এসেছেন, ভোট চেয়েছেন। আগামী পাঁচ বছরের জন্য অভিভাবক নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ থাকা উচিত বলে মনে করি। তাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি।
রাজধানীর সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী টার্মিনাল ঘুরেও দেখা গেছে একই চিত্র। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে নিজের স্ত্রী-সন্তানকে বাসে তুলে দিতে এসেছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা বরিশালের রাতুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমার স্ত্রী এলাকায় ভোটার হয়েছে। এবারই প্রথমবার ভোট দিবে ও। তাই বাড়ি যাওয়ার জন্য তার মধ্যে একটু বাড়তি উচ্ছ্বাস।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খোলা থাকায় আমি আজ যেতে পারছি না। শনিবার যেহেতু দূরপাল্লার বাস চলবে তাই ওই দিন অফিস শেষ করে আমি বাড়ি যাব।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনেও দেখা গেছে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল। সেখানে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ মাহমুদের সঙ্গে।
সিরাজগঞ্জগামী মাহমুদ বলেন, ভোটার হওয়ার পর এটাই প্রথম জাতীয় নির্বাচন। কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আনন্দ উপভোগ করতে চাই। মেসের সকলেই বাড়িতে চলে গেছে, তাই দুইদিন আগেই বাড়ি যাচ্ছি।
সায়েদাবাদের হানিফ কাউন্টারে কর্মরত শফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা থেকে টিকেটের বুকিং বেশি হচ্ছে। ঢাকা থেকে প্রত্যেকটি বাস আসন ভর্তি করে বের হচ্ছে। তবে ঢাকার বাইরে থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলোর বেশিরভাগ আসনই ফাঁকা থাকছে।
যাত্রীর চাপ বেশি থাকলেও টিকেটের দাম বাড়ানো হয়নি বলেও জানান তিনি।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে চাঁদপুরগামী লঞ্চগুলোতেও দেখা গেছে বাড়তি যাত্রী। তবে সন্ধ্যার পর এই চাপ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ চালকরা।
এছাড়া বরিশালের বেশিরভাগ লঞ্চের কেবিন আগেই বুকিং হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ ম্যানেজাররা।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪১ জন। নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন ও হিজড়া ভোটার ৮৪৯ জন।
একুশে সংবাদ/এ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :