রাজধানীর গুলশান-১-এ অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ ‘গুলশান শপিং সেন্টার’ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (২২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩০ দিনের মধ্যে গুলশান শপিং সেন্টার ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন। ডিএনসিসি, রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
গত ২৩ জুলাই রাজধানীর গুলশান-১ এ অবস্থিত গুলশান শপিং সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সিলগালা করে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি ককরপোরেশন (ডিএনসিসি)। পরে গুলশান শপিং সেন্টার ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্ট রিট করেন বানী চিত্র ও চলচ্চিত্র নামে দুটি কোম্পানি। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।
গুলশান শপিং সেন্টারের হোটেল, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান। ‘গুলশান শপিং সেন্টার’-এর জরাজীর্ণ ভবন ও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকার কারণে ২০২১ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর মার্কেটটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ডিএনসিসিকে জরুরি ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দেয়।
অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন বলেন, শপিং সেন্টারটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনও ধরনের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে দোকান মালিকদের ভবন খালি করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা সেটি করেনি। ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত এই ভবন ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বারবার সতর্ক করা হলেও ব্যবসায়ীরা পরিত্যক্ত ভবনটি খালি করছে না। খালি করার জন্য একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছে। জানমালের নিরাপত্তার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সুপারিশ বাস্তবায়নে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯, তৃতীয় তফসিল-১৭, ইমারত নিয়ন্ত্রণ ইমারত সম্পর্কিত প্রবিধানের ১৭.১ ও ১৭.২ অনুযায়ী জনস্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি সিলগালা করা হয়েছে।
ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় ও নিরাপত্তার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ প্লাটুন পুলিশ, ১ প্লাটুন এপিবিএন ও অন্যান্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ উপস্থিত হয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মার্কেটটির গেটসমূহ তালাবদ্ধ ও সিলগালা করা হয়। এসময় মাইকিং করা হয় ও মালামাল সরানের জন্য নিদের্শনা দেওয়া হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ,গ্যাস ও অন্যান্য সেবা সংস্থার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :