চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা। দীর্ঘ ৩৯ বছর ধরে বেতন-ভাতা বঞ্চিত হয়েও শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রেখেছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা। এজন্য সারা দেশের দেড় হাজার ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে জাতীয় করণের দাবী জানানো হয়।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোট আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান।
আলহাজ্ব কাজী ফয়েজুর রহমানেরর সভাপতিত্বে শিক্ষক সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা বশির বিল্লাহ আতাহারী, সামছুল আলম, মাহমুদুল হাসান, আ: রহিম, মো: আলামিন, আঃ হান্নান, খোরশেদ আলম, আঃ কুদ্দুস, সওকত মাস্টার, ছাইফুল্লাহ হেলাল, মো: সাইফুল ইসলাম, মো: নুরুল আমিন, আঃ করিম ভুইয়া প্রমুখ।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তৃতায় সংগঠনের মহাসচিব মো: তাজুল ইসলাম ফরাজী বলেন, ১৯৭৮ অডিনেন্স ১৭ (২) ধারা মোতাবেক মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। এর পর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৪ ইং সনে একই পরিপত্রে রেজিষ্ট্রার বেসরকারী প্রাইমারী ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বৃদ্ধি হতে হতে ২০১৩ সনে ৯ জানুয়ারী বর্তমান মহাজোট সরকার ২৬১৯৩টি বেসরকারী প্রাইমারী স্কুল জাতীয়করণ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় সকাল ০৯ থেকে বিকাল ০৫ টা পর্যন্ত সরকারী একই সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণি শিক্ষার্থী অতীতে সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও বর্তমানে ৫ম শ্রেণী বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ২২-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পায়। কিন্তু ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকগণ জাতীয়করণ তো দুরের কথা এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারপরও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৫১৯টি ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকগণ সর্বসাকুল্যে প্রধান শিক্ষক ২৫০০ টাকা, সহকারী শিক্ষক ২৩০০ টাকা ভাতা পায় বাকি রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত মাদরাসাগুলোর শিক্ষকগণ ৩৯ বছর যাবৎ বেতন ভাতা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। মন্ত্রনায়ের মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা বারবার বেতন-ভাতা প্রদানের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য তারা ৭দফা দাবী পেশ করেন।
দাবিতে বলেন, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় জাতীয়করণ করা। প্রাইমারী শিক্ষার্থীদের ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের উপ-বৃত্তিসহ সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা।মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রেজিঃপ্রাপ্ত কোড বিহীন মাদ্রাসাগুলো কে অবিলম্বে কোড নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রাথমিকের ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের পি, টি, আই ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা। সকল মাদ্রাসায় ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা। মাদ্রাসাগুলোকে স্থায়ী রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা ও মাদ্রাসাগুলোর ভৌত অবকাঠামো নিশ্চিত করা।
এসময় সারা বাংলাদেশ থেকে আগত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/রাফি/বাবু/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :