আর দুই কিংবা তিন দিন পর রোযার ঈদ ( ঈদুল ফিতর)। তাই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। গতকাল শনিবারের চেয়ে আজ রোববার যাত্রীর চাপ বেড়েছে। যাত্রীর চাপ বাড়ায় বাড়তি ভাড়া আদায় ও কিছুটা সময় বিলম্ব করে বাস ছাড়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
রোববার রাজধানীর ফুলবাড়িয়া-যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে এ চিত্র দেখা গেছে।
শনিবার যাত্রীর চাপ কম থাকলেও আজ সরকারি ছুটি হওয়ায় যাত্রীর ব্যাপক চাপ রয়েছে। বাসের সব সিট ফুল হওয়ার পরেও ২০ মিনিট থেকে ৪০ মিনিট দেরিতে বাস ছাড়ছে। আর এতে করে গরমে কষ্ট পাচ্ছে নারী-শিশুরা।
আর বাস মালিকরা বলছেন, রাস্তায় যানজটের কারণে আসতে দেরি হওয়ায় বাসছাড়তে সামান্য বিলম্ব হচ্ছে। যা অন্যান্য বছরের চেয়ে কম। পাশাপাশি ভোগান্তি এড়াতে কয়েক আগেভাগেই মানুষ বাড়ি যাচ্ছে। যে কারণে এবছর ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে।
দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ফুলবাড়িয়া-যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ ও ধোলাইপাড় এলাকায় দেখা যায়, অন্য দিনগুলোর চেয়ে বাস ও যাত্রীর অনেক ভিড়।
বরিশাল অভিমুখী ‘এনা’ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সানোয়ার বলেন, আমাদের ত্রিশ মিনিট পরপর আমাদের গাড়ি ছেড়ে যায়। কিন্তু ঈদযাত্রায় যাত্রী অনেক বেশি। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর গাড়ি ছাড়ছে। দূরপাল্লার ও নিকটবর্তী রুটে আসতে-যেতে তেমন যানজটের সম্মুখীন না হলেও হানিফ ফ্লাইওভারে যানজটরের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে বাস না আসায় যথা সময়ে বাস ছাড়া যাচ্ছে না
ফুলবাড়িয়া থেকে গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া-খুলনা-পিরোজপুর অভিমুখী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টারে ভিড়। নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। তবে এ নিয়ে যাত্রীদের তেমন কোন ক্ষোভ নেই।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মো. রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের গাড়ি ছাড়ার কথা পৌনে ২টায়। ছেড়েছে ২টা ২০ মিনিটে। ঝামেলা এড়াতে নরসিংদি থেকে ফুলবাড়িয়া টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টারে চলে এসেছি। আগে বাড়ি যেতে সাত থেকে ৮ ঘন্টা লাগতো। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে এখন সাড়ে চার ঘন্টায় যাবো। গরমে একটু কষ্ট হলেও সময়মতো খুলনা পৌঁছে যাবো।
সায়েদাবাদ ইমাদ পরিবহনের কাউন্টারে গোপালগঞ্জ –পিরোজপুরগামী যাত্রীদের ভিড়। কাউন্টার ম্যানেজার মো. সবুজ বলেন, গত এক সপ্তাহ আগ থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছি। এখন যারা যাচ্ছেন তাদের প্রায় সবাই আগেই টিকিট নিয়েছিলেন। গাড়ির সব আসনেই যাত্রী যাচ্ছে। বাস ছেড়ে যেতে ২০ থেকে ৩০মিনিট দেরি হচ্ছে।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনে খুলনাগামী বাসের অপেক্ষায় ছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মাহিয়া ইসলাম। তিনি বলেন, আগাম টিকিট সংগ্রহ করেনি। আজ পরিবার নিয়ে চলে আসছি। এখন কাউন্টার থেকে বলছে অপেক্ষা করতে হবে। প্রচণ্ড গরমে কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় কে জানে। এখন তারা দুই থেকে তিনশ টাকা বেশি চাচ্ছে। কি আর করার বাড়তি ভাড়া দিয়েই বাড়ি যেতে হবে।
সায়েদাবাদে কথা হয় হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার যায়েদ হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ভোর সাড়ে ৬টা থেকে সিলেট,চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে গাড়ি যাচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে একটু যাত্রীর চাপ বেশি। আগামীকাল আরো চাপ বাড়বে।
বেশিরভাগ পরিবহন দক্ষিণাঞ্চমুখী।তাই হানিফ ফ্লাইওভারে প্রচুর যানজট থাকায় নির্দিষ্ট বাস ছাড়া যাচ্ছেনা। রাস্তায় সামান্য যানজট রয়েছে।
পটুয়াখালীগামী যাত্রী মফিজুর রহমান বলেন, যেখানে নিয়মিত ভাড়া ৬০০ টাকা, এখন ৮৫০ টাকা। টিকিটও পাচ্ছি না। ফরিদপুর-পিরোজপুর-গোপালগঞ্জের যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, যেখানে ৩০০ টাকা ভাড়া, আজ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে।অর্থাৎ আজ দুই থেকে তিন শত টাকা বাড়তি নিচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :