রাজধানীর ডেমরায় একই ভবনের ৪ টি ফ্লাটে একই সময়ে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. ওয়াহিদুজ্জামান সবার পক্ষে বুধবার দিনগত রাতে ডেমরা থানায় অজ্ঞাতনামা চোর বা চোরদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত ৯ এপ্রিল ডেমরার সাইনবোর্ড সংলগ্ন নিউটাউন আবাসিক এলাকায় (মাহমুদ নগর) বাড়ী নং—২৫৪/৩৫ ভবনে সকাল ৯ টা থেকে ১৫ এপ্রিল রাত ১১ টার মধ্যে যে কোনো সময়ে বাসা খালি পেয়ে এ দুর্ধর্ষ চুরি করেছে চোরেরা। কানো ফ্লাটের জানলার গ্রিল ও কোন ফ্ল্যাটের বারান্দার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে ৪ টি ফ্ল্যাটে চুরি সংঘটিত করা হয়। এ সময় ওয়াহিদুজ্জামানের ফ্ল্যাট নং—২/বি থেকে ৩৫ হাজার টাকা, সোলাইমানের ৩/এ থেকে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সামছুর রহমানের ৩/বি থেকে ৬ লাখ টাকা ও বোরহান উদ্দিনের ৪/এ থেকে ৫৫ হাজার টাকা সহ প্রতিটি ফ্ল্যাটে থাকা ৫ লক্ষ টাকার স্বর্ণালঙ্কার সহ যাবতীয় মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। এ ভবন থেকে নগদ ১১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা এবং ৫ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় অজ্ঞাত চোর চক্র।
সুত্রে জানা গেছে, স্ব-পরিবারের ঈদের টানা ছুটিতে গ্রামের বাড়ীতে ভুক্তভোগী মো.সোলাইমান, সামছুর রহমান, বোরহানউদ্দিন ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান গত ৯ এপ্রিল সকাল ৯ টার দিকে রওয়ানা করেন। পরবর্তীতে গত ১৫ এপ্রিল রাত ১১ টায় বাসায় এসে তারা দেখেন সবার বাসায় একই নিয়মে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে চুরি হয়েছে।
এ ছাড়া ১০ এপ্রিল ঘর তালা দিয়ে স্বপরিবারে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান মো. ইউসুফ নামে একজন। গত ১২ এপ্রিল বিকালে তারা বাড়িতে এসে দেখেন ঘরে চুরি হয়েছে। পরে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা হয় ১১ এপ্রিল দিবাগত গভীর রাতে ঘর খালি পেয়ে তার শ্বশুর,শ্যালক ও তাদের এক সহযোগী মিলে ইউসুফের ঘরে চুরি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এ সময় তারা ওই ঘরে থাকা নগদ ৯ লক্ষ টাকা, সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যার অনুমান মূল্য ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ১ টি মোবাইলফোন, ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ১ টি ট্যাব, বাড়ির দলিলপত্র, মামলার কাগজপত্র ও ব্যাংকের চেক বই চুরি করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. ইউসুফ সরকার গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত গভীর রাতে ডেমরা থানায় অভিযুক্ত ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলো—ডেমরার ডগাইর নিউ টাউন এলাকার মৃত লাল মিয়া আমিনের ছেলে ও বাদীর শ্বশুর মুখলিছুর রহমান কাসেমী (৬০), তার ছেলে মো. আসাদ (১৪) ও সহযোগী চাঁদপুর সদর থানার মধ্যে চর গ্রামের মো. আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম (২৪)।
এদিকে ডেমরার পশ্চিম হাজীনগর, হাজিনগর, বক্সনগর, ডগাইর, বড়ভাঙ্গা ব্যাংক কলোনী এসব এলাকায় ছিঁচকে চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছ। এরা রাতের আঁধারে সুবিধাজনক স্থান থেকে বিভিন্ন ভবনের বিদ্যুতের সার্ভিস লাইনের তার কেটে নিয়ে যায়। এভাবে গত ২ মাসে প্রায় ৩০ টি ভবনের তার চুড়ি হয়েছে বলে সূত্রে জান গেছে। এ নিয়ে ২ মাসে চুরির ঘটনা ঘটেছে মোট ৩৫ টি।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার অফিসার ইনচার্জ মো,জহিরুল ইসলাম বলেন, এবার রোজার সময়েই আমরা কখনো মাইকিং ও কখনো মসজিদে জুমার দিনে মাইকিং করে সবাইকে সজাগ থাকার জন্য অনুরোধ করেছি। কারণ ঈদের লম্বা ছুটিতে অসাধু চক্র সুযোগ নিতে পারে। তারপরও কিছু কিছু বিছিন্ন চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা এসব চোরদের ব্যাপারে সিরিয়াস। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওয়াতায় আনা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :