শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্যদূরীকরণ-মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ণের আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় ২৭/৫-খ, তোপখানা রোড, সেগুনবাগিচা সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয় আয়োজিত ঐতিহাসিক ‘শিক্ষা দিবস’ উপলক্ষ্যে শিক্ষক নেতারা এসব কথা বলেন। এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)’।
সভার শুরুতে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ সেপ্টেম্বর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর শরীফ কমিশনের প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সাহসী সংগ্রামে অংশগ্রহণকারীসহ গ্রেফতার হওয়া ছাত্র আবদুল হালিম ও আবদুল হামিদসহ আহতদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শিক্ষক নেতারা। সভায় শিক্ষা দিবস সরকারীভাবে পালনের আহ্বান জানান শিক্ষক নেতারা।
১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে তাঁরা বলেন, তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের পর পরই ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর এস এম শরীফের নেতৃত্বে গঠন করেন শরীফ কমিশন নামের শিক্ষা কমিশন। যা ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ আগস্ট প্রতিবেদনে শিক্ষা সংকোচন নীতির স্বপক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাবনা পেশ করেন। তাই তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের জনবিরোধী শিক্ষা সঙ্কোচনমূলক শিক্ষানীতির প্রতিবাদে এবং একটি গণমুখী শিক্ষানীতি প্রবর্তনের দাবিতে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানী শাসকদের শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ঐ দিন শহিদ হন; ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না জানা অনেকেই এবং গ্রেফতার হন ছাত্র ইউনিয়নের আবদুল হালিম ও আইনের ছাত্র আবদুল হামিদ। তাই শিক্ষার জন্য আত্মত্যাগীদের স্মরণ করতে তাৎপর্যপূর্ণ এ দিবসটি পালন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা এমপিওভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ যেখানে দির্ঘদিন যাবৎ শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। সরকার সেখানে গুটিকয়েক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্যের পাহাড় সৃষ্টি করছেন। মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবী, এ দাবী এখন ছাত্র-শিক্ষক, অভিভাবক তথা জনদাবীতে পরিণত হয়েছে। আমরা বাব বার বলে আসছি-মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা হলে সরকারে খুব বেশি অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে না বরং মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে। তাই মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ণের জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো: বজলুর রহমান মিয়া’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির অন্যতম উপদেষ্টা বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- অধ্যক্ষ মো: আবুল কাশেম, আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নূরুন্নাহার, আবু জামিল মো: সেলিম, মো: ইকবাল হোসেন, মোস্তফা জামান খান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, মো: রফিকুল ইসলাম, শাহানা বেগম প্রমুখ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :