৬০ হাজার জাল সনদধারীকে চাকরিচ্যুত করাসহ পাঁচ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষকরা। রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরাম।
নেতৃবৃন্দ জানান, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা মৌখিক আশ্বাস দেন এবং মন্ত্রণালয় থেকে জানতে পারি আমাদের আবেদনটি নিয়োগ জটিলতা নিরসনে জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা এখনো পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট তথ্য জানতে পারি নাই। এজন্য আজ আমরা আইন উপদেষ্টার সাক্ষাতে জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে অভিমুখে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
এসময় তারা আরও জানান, আমরা ভেবেছিলাম এই অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সঙ্গে হওয়া সব বৈষম্য দূর করে আমাদের নিয়োগ কার্যকর করবেন। অথচ আজ পর্যন্ত আমাদের নিয়োগের কোনো আশ্বাস না পেয়ে আমরা বাকরুদ্ধ। গত সরকার আমাদের নিয়োগ বঞ্চিত করেছে। প্রায় তিন বছর ধরে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি, আন্দোলন চলছে, কূটনীতিক তৎপরতা চালাচ্ছি তবু সমাধান আজ পর্যন্ত পাইনি। ২০১৬ থেকে আইনের মাধ্যমে নিয়োগের লড়াই চলছে। আইন আমাদের পক্ষে আসে, নিয়োগ হয় না। আবার রিভিউ হয়। জোর করে আমাদের ওপর আইন প্রয়োগ করা হয়। যে পরিপত্রের আওতায় পড়ি না সেই আইনের দোহাই দিয়ে নিয়োগ বঞ্চিত করে রাখার অপকৌশল অবলম্বন করে চলেছে এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন আমরা জানতে চাই, এই অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের নিয়োগের ব্যাপারে কী ভাবছেন?।
এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বঞ্চিত হওয়ায় আমরা হতাশ, অসহায়, অর্থহীন হয়ে পড়েছি। এনটিআরসিএ বিভিন্ন সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত, আইন পরিবর্তন, সংযোজন ও বিয়োজনের ফলে নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছি। নিয়োগ দেওয়া জন্য আইন পরিবর্তন করা হয়নি। গভর্নিং বডির অনৈতিক লেনদেন জন্য আমরা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছি। ২২ হাজার ইনডেক্স ধারী দের পুনরায় সিলেক্ট করে। আর ৬ হাজার জাল সনদধারীদেরকে এখনো চাকরিতে বহাল রেখেছে। তাদের এমপিও করা হয়েছে। আজকের আমাদের নিয়োগ না দেওয়ার একটি বিশেষ কারণ হলো, আমাদের রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জাল সনদ দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিয়োগ কার্যকর হলে তাদের এমপিও বাতিল হবে। জাল সনদ ধরা পড়বে। সেই কারণে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এখনো আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন।
পাঁচ দাবিগুলো হলো:
১। ১-১২ তম সব নিয়োগ বঞ্চিত সনদধারীরা যে বয়সে নিবন্ধন সনদ অর্জন করেছে সেই বয়স অনুযায়ী শর্তহীনভাবে সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে।
২। অনতিবিলম্বে বিশেষ গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৩। ১-১২তমদের জন্য মেরিট অনুযায়ী পৃথক ডাটাবেজ তৈরি ও সংরক্ষণ করতে হবে।
৪। আমাদের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদের পরীক্ষা নেওয়া ও পরবর্তী ব্যাচের নিয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।
৫। ৬০ হাজার জাল সনদধারীকে চিহ্নিত করে চাকরিচ্যুত করা ও তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের সভাপতি নীলিমা চক্রবর্তী, সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসরীন সুলতানা, সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক দুলাল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক গণ-ছামিউল আলম, সুমন দাস, মারুফ মহসিন, নূরুদ্দীন, প্রসেনজিৎ বারোই, আজিম উদ্দিন প্রমুখ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :