ফরিদপুর পৌরসভার ১৭নং ওয়ার্ডের ভাটিলক্ষীপুর এলাকায় একই পরিবারের ৫ জন এক সাথে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। এর আগে তারা সবাই হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা ওই পাঁচ ব্যক্তি হলেন- মোসা. রাবেয়া বেগম (৪০), মো. শেখ সাদ (১৭), মো. শেখ ইব্রাহিম (১৬), মো. সেখ আফিফ (১২) ও ফাতিমাতুজ জোহরা (৯)। তাদের পূর্বের নাম ছিল যথাক্রমে, সাধনা রানী মালো, জয় মালো, বিজয় কুমার মালো, অজয় কুমার মালো ও অমৃতা কুমার মালো।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) বিকালে ফরিদপুর পৌরসভার ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসার মন্ডল ওই পরিবারের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইসলাম ধর্মের প্রতি ভালোবাসা ও বিশ্বাস করে কালিমা পড়ে ও কোর্টে এভিডেভিড করে ওই পরিবারের পাঁচ সদস্য হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তারা স্থানীয় এক মাওলানার কাছে গিয়ে কালেমা পাঠ করেন। তাদের কাউকে কোনো প্রকার জোর, ভয়ভীতি কিংবা বলপ্রয়োগ করেনি। তারা সদিচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন বলে জানান ওই পৌর কাউন্সিলর।
তিনি আরও বলেন, ওই পরিবারের ছোট ছেলে সেখ আফিফের সুন্নতে খাৎনা ছিল শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারী)। তবে, তাকে দাওয়াত করা হলেও ব্যস্ততার কারণে যাইতে পারেননি বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারী) ওই পরিবারের চতুর্থ সন্তান মো. সেখ আফিফের সুন্নতে খাৎনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ধর্মান্তরের বিষয়টি পুরো এলাকাবাসী জানতে পারেন। ওই সময় এলাকার শতাধিক মানুষ সুন্নতে খাৎনা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন।
হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের এভিডেভিডের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর জর্জ কোর্টের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান ফারুক বলেন, এমাসের গত ১৯ জানুয়ারি ফরিদপুর জজকোর্টে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে একই পরিবারের ৫ জন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। একই সাথে তারা ইসলাম ধর্মগ্রহণ পূর্বক ইসলাম ধর্মের রীতি-নীতি, বিধি-বিধান যথারীতি মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা সাধনা রানী। যার বর্তমান নাম মোসা. রাবেয়া বেগম। ওই রাবেয়া বেগম ফরিদপুর পৌরসভার ভাটিলক্ষীপুর এলাকার সুনীল মালোর মেয়ে। এব্যাপার রাবেয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা যে এলাকায় বসবাস করি সে এলাকার মুসলমানরা খুবই ভাল ও দয়াবান। দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের সমাজে মিলেমিশে বুঝতে পারলাম ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। এই ধর্ম সম্পর্কে জেনে শুনে আমরা স্ব-ইচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি বলে জানান তিনি। তার প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার দীর্ঘদীন পর তিনি মুসলিম যুবককে বিয়ে করেছেন বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়াও আমার পরিবারের সদস্য জয় মালো যার বর্তমান নাম মো. সেখ সাদ। সে স্থানীয় মুসুল্লিদের সাথে ইসলাম ধর্মে কি আছে এটা জানতে বুঝতে চল্লিশ দিনের চিল্লায় (তাবলীগ) গিয়ে ফিরে এসে এখন সে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। তার কাছে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জেনে শুনে আমরা সিদ্বান্তে আরো আগ্রহী হয়ে পড়ি। পরে সকলে কালেমা পড়ে প্রথম মুসলমান হই এবং নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আমরা সকলে এফিডেভিট করি
একুশে সংবাদ/না.হা.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :