যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় স্কুলের কোচিং শেষে বাসায় ফিরে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অনি রায় (১৩) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
সোমবার (২৭ মার্চ) আনুমানিক সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে নিহতের পরিবারের দাবি উত্ত্যক্তর শিকার হয়ে তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে পৌর সদরের মিস্ত্রীপাড়া এলাকার প্রবাসী গৌতম রায়ের মেয়ে এবং ঝিকরগাছা বদরুদ্দীন মুসলিম (বিএম) হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহতের ভাই অর্ঘ্য রায় জানান, প্রতিদিনের মত আমার বোন স্কুলে কোচিংয়ের জন্য যায়। কোচিং থেকে ফিরে কাউকে কিছু না বলেই নিজের ঘরে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তবে মৃত্যুর আগে সে তার এক বান্ধবীকে কল দিয়েছিল কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি।
অর্ঘ্য দাবি করেন তার বোন স্কুল থেকে ফেরার পথে কিছু বখাটে তাকে উত্ত্যক্ত করে। কয়েকজন তার পিঁছু নিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী উর্মি নামের এক মেয়ে জানান, নিহত অনি রায় অনেক দ্রুত দৌড়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো আর তিনটা ছেলে তার পিছু পিছু যাচ্ছিলো। এদিকে হাসপাতালে নেয়ার পরে নিহতের ভাই অর্ঘ্যের সাথে তিন যুবকের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। অর্ঘ্যর দাবি ওই তিন যুবকই অনি রায়কে উত্ত্যক্ত করতো। তাদের মধ্যে একজন হাসপাতাল রোড এলাকার জামাল ফার্মেসির মালিকের ছেলে সাকিব। সেও বি.এম হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঝিকরগাছা বি.এম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান, অনি রায় স্কুলে কোচিং করতে এসেছিল। বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে। তাকে কেউ উত্ত্যক্ত করতো কিনা জানা নেই। ওর সহপাঠীদের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানা যাবে।
ঝিকরগাছা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, নিহত অনি রায় নিজ ঘরে মায়ের শাড়ি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এখনো পর্যন্ত উত্ত্যক্ত করার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তে উত্ত্যক্ত করার প্রমাণ পেলে অবশ্যই দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। নিহতের ভাই একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ময়নাতদন্ত শেষে লাশ ঝিকরগাছায় পৌছালে বখাটে ছেলেদের শাস্তির দাবিতে সহপাঠী ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/জ.ই.প্রতি/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :