এ বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে দেশের সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুজব প্রতিরোধে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চুয়াডাঙ্গা শহরের সবগুলো কোচিং সেন্টার অবাধে পরিচালিত হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরও কিভাবে কোচিং সেন্টার খোলা রাখা হয়েছে?
শনিবার (৬ মে) চুয়াডাঙ্গা শহরের মুক্তিপাড়া, কাঠপট্টি এলাকা, সরকারি কলেজের পাশে, পাসপোর্ট অফিস সড়ক, চক্ষু হাসপাতালপাড়া, ঈদগাহ পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টারে ধরা পড়ে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানোর চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের সিনেমা হলপাড়ায় মুনজুরুল ইসলামের স্টাডি হোম, স্মার্ট কোচিং সেন্টার, শাহীন আলম, বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের মঈনুদ্দিন, চক্ষু হাসপাতালপাড়ার দোস্ত মোহাম্মদ, মরিয়ম খাতুনের রেডিয়েন্ট স্টাডি কেয়ার ও মুক্তিপাড়ায় একটি কোচিং সেন্টারসহ আরও অনেক কোচিং সেন্টার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে কোচিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
কোচিং সেন্টারের মালিকদের দাবি, তারা সরকারি কোনো নির্দেশনা এখনও পায়নি। আবার অনেকে বলছেন, শিক্ষার্থীদের কোর্চ সম্পন্ন না হওয়ার কারণে তারা তাদের কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অনেক শিক্ষকও আছেন। প্রশাসন চাইলেই প্রতিটি কোচিং সেন্টারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করলেই তার প্রমাণ পাবে।
এসব কোচিং সেন্টার খোলা রাখার কথা স্বীকার করে কোচিং সেন্টারের পরিচালকরা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছি। বর্তমানে আমরা সকল শ্রেণির ব্যাচ চালু রাখলেও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে না। মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে কেন কোচিং সেন্টার খোলা রাখা হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর দেননি কেউ। তবে কোচিং সেন্টার বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও কোচিং কর্তৃপক্ষ খোলা রাখায় তারা ক্লাসে আসছে বলে দাবি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশ না করার স্বর্থে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোচিং-এর স্যারদের নির্দেশে বাধ্য হয়ে কোচিং-এ আসি। এ মাসে না আসলেও বেতন ঠিকই দিতে হবে। এ বিষয়ে কোচিং সেন্টারের পরিচালকদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা বন্ধ রাখলে আমরা আসতাম না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই। আমরা পরিস্থিতির শিকার। কিছু বলতেও পারবো না। পড়তে না আসলেও এই মাসের দিতে হবে। নইলে পরের মাসে বলবে, নতুন করে ভর্তি হতে হবে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বলেন, ‘অনেক সময় শহরে হাটতে বের হই। তখন কোনো কোচিং সেন্টার খোলা রাখা দেখিনি। তবে, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শামীম ভূইয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেই হোক, আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
একুশে সংবাদ/র.র.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :