চলমান ঘূর্ণিঝড় মোখা আতংকে বাড়িঘর ছেড়ে এয়ার আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনে আশ্রয় নেওয়া জয়নব বেগম (১৯) নামের এক প্রসূতি নারীকে নিজের সরকারি গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার। আর সেই প্রসূতি নারীর ভূমিষ্ট হল এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান। নবজাতক ও মা দুইজনেই সুস্থ আছেন। ওই নবজাতকের নাম রাখা হয় মোখা।
রবিবার (১৪ মে) সকাল ৭ টায় পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভূমিষ্ট হয় এ নবজাতক। তিনি রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলা পাড়ার যুবক মো. আরকান (২২) এর স্ত্রী।
উল্লেখ্য যে, শনিবার (১৩ মে) দিবাগত রাতে আশ্রয় কেন্দ্রে প্রসব বেদনা উঠলে হাসপাতালে নেওয়ার মতো কোনো যানবাহন না থাকায় সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন ওসি ওমর হায়দার। জানা যায়, আশ্রয়কেন্দ্রে রাত ১ টার দিকে প্রসববেদনায় কাতরাতে শুরু করলে হাসপাতালের নিচে গাড়ি খোঁজাখুঁজি শুরু করেন আরকান। কিন্তু মধ্যরাতে তিনি কোন গাড়ি পাচ্ছিলেন না। ঠিক ওই সময় আশ্রয়ণ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার। দুর্গত দম্পতির অসহায়ত্ব দেখে তাঁদের নিজের সরকারী গাড়িতে তুলে নেন তিনি। দিয়ে আসেন ১২ কিলোমিটার দূরের সরকারী হাসপাতালে।
আশ্রয় কেন্দ্রে আসা স্থানীয় অপর নারী ফাতেমা বেগম বলেন, ঠিক ওই মুহূর্তে জয়নবকে হাসপাতালে পৌঁছানো না গেলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো। কারণ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে কোনো ধাত্রী পাওয়া যায়নি।
স্বামী মো. আরকান বলেন, স্ত্রী জয়নবকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছায় এখন আর ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন ডাক্তার। দুর্যোগকালীন সময়ে বিপদে এগিয়ে আসায় পুলিশের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, ওই নারীর ছেলে সন্তান ভূমিষ্ট হয়েছে।
এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার বলেন, মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে প্রসব বেদনায় কাতরানো ওই নারীকে আমি দুর্গত এলাকা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে এনেছি। ওই মুহূর্তে আমার সরকারী গাড়ি ব্যবহার করা ছাড়া উপায় ছিলো না। পুলিশের কাজ তো জনকল্যাণ। আমি সে কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। ওই প্রসূতি নারীর ছেলে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ায় আমি খুশি হয়েছি।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :