ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের যোগাযোগ ও বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত একটি নিভৃত এলাকার নাম হচ্ছে গোয়ালনগর।
ভিটাডুবি, মাছমা, সিমের কান্দি, ঝামারবালি, সোনাতোলা,কদমতলি, নোয়াগাঁও, মাইঝখোলা, দক্ষিনদিয়া, রামপুর, লালয়ারটুক নিয়ে গোয়ালনগর ইউনিয়নের ২০ হাজারেরও বেশী মানুষ বর্ষা মৌসুমে পানি বন্দী অবস্থায় থাকে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে এক গ্রাম হতে আরেক গ্রামে যাতায়াতের জন্য নৌকা ছাড়া চলাচলের উপায় নাই। শুকনো মৌসুমে গুদারা নৌকা পাড় হয়ে প্রায় ১০ কিঃ মিঃ মাটির রাস্তায় অল্প কিছু মোটর সাইকেল ভাড়ার বিনিময়ে লোক টানে। যা মহিলা যাত্রীদের জন্য খুবই ব্রিবতকর। তবে বেশীর ভাগ সময় পায়ে হেটে চলাফেরা করে এলাকার মানুষ।
স্বাধীনতার ৫২ বছর পেড়িয়ে গেলেও অবহেলিত এ ইউনিয়নে এখনও পর্যন্ত তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।গোয়ালনগরের নিভৃত এই পল্লী অঞ্চলে এখনও কোন সিএনজি চালিত গাড়ি,অটোরিকশা জাতীয় যানবাহন চোখে দেখেনি ওই এলাকার মানুষজন।
প্রতি বর্ষাতেই গ্রামের লোকজন, স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীদের পানিবন্দী অবস্থায় চরমদূর্ভোগে পড়েন। গোয়ালনগর ইউনিয়নের গ্রামগুলো থেকে যোগাযোগ ব্যাবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা শহরে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে থাকা কোন মুমর্ষ রোগীকে জরুরী অবস্থায় চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
লালয়ারটুক গ্রামের লায়ন মুহাম্মাদ কামাল হোসেন বলেন, বর্ষাকালে বর্ষার উত্তাল ঢেউয়ের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় এই ইউনিয়নের বসবাসকারী সকলের। উত্তাল ঢেউয়ে গ্রাম ভাঙ্গন থেকে বাঁচাতে প্রতিটি গ্রামে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধ নিমার্ণ করা অত্যন্ত জরুরী।পাশের অষ্ট্রগ্রাম উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোয়া সর্বত্র লাগলেও গোয়ালনগরবাসি সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এখানে শুকনো মৌসুমের জন্য সাবমার্স রোড/রাস্তা নির্মাণ হলে ভোগান্তি কিছুটা লাঘব হবে।
স্থানীয় গ্রামবাসী জানান, প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা রাস্তা করে দিবেন। পর্যটন এলাকা করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট আদায় করলেও জয়ী হয়ে আমাদের কথা মনে রাখেনা কোন জনপ্রতিনিধি।
গ্রামের প্রবীন মুরুব্বী সাবেক চেয়ারম্যান কিরন মিয়া বলেন, আমাদের দুঃখ দূর্দশা লেগেই আছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে নাসিরনগরের অবহেলিত জনপদ গোয়ালনগরের যোগযোগ ব্যবস্থাপনায় সরকারি পদক্ষেপ প্রয়োজন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :