ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিষাক্ত কেমিক্যালে পাকানো হচ্ছে কলা। গরমে ব্যাপক চাহিদা থাকায় অসাধু আড়তদাররা বেপরোয়া উঠেছেন। উপজেলার বিভিন্ন কলার আড়তে কলা পাকানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যালের মাধ্যমে। আর এসব পাকানো কলা সরবরাহ করা হচ্ছে বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, ফুটপাতের দোকান, স্কুল-কলেজের পাশের দোকানসহ নানাস্থানে।
এছাড়াও এসব বিষাক্ত কেমিক্যালে পাকানো কলা ভ্যানে করে প্রতিটি বাসা বাড়ির সামনে বিক্রি করা হচ্ছে। কলা পাকা মনে হলেও উপরে চামড়া হলুদ কিন্তু ভেতরে কাঁচা। এসব বিষাক্ত কলা খেয়ে শিশু ও বৃদ্ধসহ সব শ্রেণির মানুষ দিন দিন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন কলার আড়তে গণহারে কাঁচা ও অপরিপক্ব কলায় এসব বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানোর হিড়িক পড়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কলার বেপারী বলেন, তাঁরা দ্রুত কলা পাকানোর কৌশল হিসেবে বাগান থেকে কলা কেনার পর কলায় প্রমোট ও রিপেনসহ নানা ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকেন। ওই কেমিক্যাল মিশ্রিত কলা দুই-এক দিনের মধ্যেই নরম ও হলদে রং ধারণ করে খাবার উপযোগী হয়। যা তাদের বিক্রি করতে সহজ হয়।
আড়তের এক কর্মচারী নাম না প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এখানে প্রতিদিনই রাতে কাঁচা কলা আসে। আমরা পানিতে ইথিফন দিয়ে সেই পানিতে কলার কাঁদি ডুবাই। তারপর সেগুলো আবার প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখি। দ্রুত কলার দরকার হলে কখনো কখনো আগুন জ্বালিয়ে তাপ দেই। তাতেই কলা পেকে যায়। এক কাঁদি কলা পাকাতে ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে বলে জানান তিনি।
বোয়ালমারী বাজারে কলা কিনতে আসা রবীন সরকার নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমরা তো প্রতিদিনই কলা খাই। কিন্তু বর্তমানে দেখছি এসব কলার ভেতর শক্তই থাকে। এক দিনের বেশি রাখলে নষ্ট হয়ে যায়। কলায় কোনো পুষ্টি থাকে না। আরেক ক্রেতা বলেন, আগে কলার অন্য রকম একটা স্বাদ ছিল। এখন নেই। তিনি বলেন, এখন কলা দেখলেই বোঝা যায় এগুলো গাছে পাকেনি। ‘জোর’ করে পাকানো হয়েছে। অথচ দাম ২০-৪০ টাকা হালি।
বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ কমপ্লেক্সে এর এক চিকিৎসক বলেন, বিষাক্ত এসব দাহ্য পদার্থ মিশানো কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সঙ্গে সঙ্গে বমিভাব ও ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। কেমিক্যাল মিশ্রিত কোনো খাদ্য গ্রহণ করলে তার প্রভাব পড়ে লিভার ও কিডনির ওপর।
তিনি আরো বলেন, ওই সব খাদ্য গ্রহণের পরে তা দাহ্যে পরিণত হওয়ার পর নিঃসরণ ঘটে লিভার এবং কিডনির মাধ্যমে। ফলে কেমিক্যাল মেশানো খাদ্য শরীরের এ দুটি অংশের ওপর প্রভাব ফেললেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কিডনিকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।
একুশে সংবাদ/স.চ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :