ফরিদপুরে তীব্র গরমের মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বেড়েছে চার্জার ফ্যান, লাইট বিক্রি। ছোট-বড় নানা ধরনের চার্জার ফ্যান এবং বিভিন্ন ধরনের লাইট দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। দিনে ১০-১২ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছেই। যার ফলে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিদ্যুতের চাহিদা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন এলাকাকে নির্ধারিত সময়ে লোডশেডিং দেয়ার হচ্ছে।
বিগত দিনে লোডশেডিং এক, দুই ঘণ্টা দিলেও এখন ১০-১২ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে বিপাকে পরেছে সাধারণ জনগণ। তাই লোডশেডিংয়ের সময় গরম ও রাতের অন্ধকার থেকে বাঁচতে বিকল্প ব্যবস্থা করছেন অনেকে। পরিবারের লোকজন নিয়ে কষ্ট করতে না হয় সেজন্য চার্জার ফ্যান, লাইট, আইপিএস ও সোলারের সাহায্যে চলে এমন যন্ত্রের খোঁজ করছেন অনেকে। এতে হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে গেছে চার্জার ফ্যান, লাইট, আইপিএসসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের চাহিদা। এসব জিনিসের ক্রেতা ও চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে দামও বেড়েছে।
২৪ ঘন্টার ১০-১২ বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার করনে অনেকেরই নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বার বার যাওয়ার জন্য লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের। গরমের মধ্যে লোডশেডিং থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে বিকল্প হিসেবে চার্জার ফ্যানের, লাইটের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। গত কয়েকদিনে ফরিদপুরে ইলেকট্রনিক দোকানগুলোতে বেড়েছে লাইট, হারিকেন ও চার্জার ফ্যানের বিক্রিও।
দোকানিরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে লাইট ও চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে। দামও একটু বেশি। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম রয়েছে ফ্যানের। প্রতিদিনই অনেক ফ্যান বিক্রি হচ্ছে। চায়না মিনি ফ্যানগুলো বেশি চলছে। স্কুলছাত্ররা এ ফ্যানগুলো বেশি কিনছে। ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে মিনি ফ্যানগুলো এক থেকে দেড় ঘণ্টা চলে এক চার্জে। এছাড়া মান ও আকার অনুযায়ী ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে ফ্যান বেশি বিক্রি হচ্ছে।
মো. আলম নামে এক দোকানি বলেন, গরম এবং লোডশেডিং বাড়ায় চার্জার ফ্যান বেশি বিক্রি হচ্ছে। আগের তুলনায় প্রতিদিন দ্বিগুণ বিক্রি হচ্ছে। দামও বেড়েছে। চায়না ফ্যানগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। অন্য ফ্যানের চেয়ে তুলনামূলক দাম একটু কম এগুলোর। এছাড়া মিনি ফ্যান বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। অনেকে ফ্যানের ব্যাটারিও কিনে নিচ্ছেন।
ফ্যান কিনতে আসা কলেজ ছাত্রী লিপি বলেন, লোডশেডিং যে হারে বেড়েছে তাতে চার্জার ফ্যানের বিকল্প নেই। বিদ্যুৎ চলে গেলে কেউ পড়তে পারে না গরমের কারণে। এজন্য চার্জার ফ্যান নিচ্ছি। বাজারে ফ্যানের দাম অনেক বেশি।
এসময় পাশে থাকা আরেক ক্রেতা বলেন, হঠাৎ করেই লোডশেডিং বেড়েছে, বাসায় বাচ্চাদের পাশাপাশি বৃদ্ধ মায়ের ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে। ঘরে বাচ্চারা অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এসি রেখেও লাভ নেই। বিদ্যুৎ না থাকলেও সব কিছুই অচল। তাই গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি।
ফ্যান বিক্রেতা সুমন সরকার বলেন, লোডশেডিংয়ে আর প্রচন্ড গরমে বিক্রি বেড়ছে ভালই। কিন্তু এ অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে মানুষ মরে যাবে। তিনি আরও বলেন, শীতে বেচাকেনা তেমন একটা না হলেও এখন ভালই হচ্ছে। এমনিতে গরমে বেচাবিক্রি ভালই হয়। তারওপর এবার তাপদাহ আর লোডশেডিংয়ে চাহিদা আরো বেড়েছে।
একুশে সংবাদ/স.চ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :