জয়পুরহাটের কালাইয়ে তীব্র গরমে বাড়ছে তালের শাঁসের চাহিদা। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সুস্বাদু তালের শাঁস বিক্রির চাহিদা প্রচুর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তালের শাঁস বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছেই বেশ জনপ্রিয়। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে সকল পেশার মানুষের কাছে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণে কম টাকায় মিলছে এই লোভনীয় তালের শাঁস। মৌসুমি বিভিন্ন ফলের সাথে তালের শাসের চাহিদা ও কদর বেড়েছে সারাদেশে।
বুধবার (৭ জুন) সরেজমিনে কালাই উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, গ্রাম গঞ্জের মোড়. রাস্তাঘাট, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, সুমিষ্ট এ ফলটির বিক্রিতারা ধারলো দা দিয়ে তাল কেটে দিচ্ছেন আর ক্রেতারাও অনেক আগ্রহ নিয়ে এগুলো খাচ্ছেন আবার কেউ বাসার জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মৌসুমি অনেক ফলের সাথে এ ফলের কদর বেড়েছে। লিচু সহ সকল ফলের দাম বেশি হওয়ায় তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পথচারীসহ সবাই বেছে নিচ্ছেন এই সুস্বাদু তালের শাঁস।
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাসস্ট্যান্ড এলাকার তালের শাঁস বিক্রেতা মোঃ আলম বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে,তখন বাজারে এটা পানি তাল বা থলথলি হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তালের শাঁস,কেউ বলে তালের চোখ আবার কেউ বলে তালের থলথলি।তিনি আরো বলেন, প্রতিটি তালের ভিতর দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে।জয়পুরহাটের বিলের ঘাট,আছরাঙা দিঘী,সন্নাসতলীসহ জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকারি কিনে ভ্যানগাড়ী,ভটভটি করে বাজারে আনা হয়। প্রতিটি তালের পাইকারি কেনা দাম পরে ৫ থেকে ৭ টাকা। প্রতিটি তাল গড়ে ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়। তীব্র গরম পড়লে তালের শাঁস অনেক বেশী বিক্রি হয়। প্রতি বছর আমি এই মৌসুমে তালের শাঁস বিক্রি করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন আমি ৫০০ থেকে ৮০০ পিচ তাল কেটে বিক্রি করি। এ বছর প্রচন্ড তাপদাহে মানুষের শরীরের ক্লান্তি দূর করতে তালের শাঁস খাচ্ছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর তালের থলথলি (শাঁস) বেশী বিক্রি হচ্ছে।
তালের শাঁস খেতে আসা ভ্যান চালক আনোয়ার হোসেন বলেন,এই গরমে তালের থলথলি খায়া শরীরটা এনা ঠান্ডা হলো অন্য ফল কিনতে মেলা টেকা লাগে তাই কম দামে তালের থলথলি খায়া তৃপ্তি পানু।
কালাই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তালের শাঁস খেতে আসা কলেজের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী জানান, অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, তখন তালের শাঁসে ফরমালিনের কোন ছোঁয়া নাই। এ জন্য প্রায় সময় আমরা এখানে এসে খেয়ে আমাদের পরিবারের জন্য বাসায় নিয়ে যাই। এগুলো খেতে নরম ও সুস্বাধু এবং শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর।
দাম কম হলেও তাজা ও ফরমালিন মুক্ত তালের শাঁস তৃষ্ণা নিবারণের পাশাপাশি ক্ষুধাও নিবারণ করে।ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ,বি ও সি-সহ নানাধরণের পুষ্টির চাহিদা মিটছে তালের শাঁসে।পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও মৌসুমি ফল হিসেবে অবদান রাখছে এই তালের শাঁস।
একুশে সংবাদ/সা.খ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :