বরিশালের উজিরপুরে মসজিদ কমিটি নিয়ে বিরোধে প্রায় তিন লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি হলো পানির দামে। মুসল্লিদের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকেলে মো.শাজাহান হাওলাদার থানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মডেল থানার পাশে থানা জামে মসজিদের কর্তৃত্ব ধরে রাখার জন্য বর্তমান সভাপতি ও স্থানীয় একটি মহল রাত্রারাত্রী মসজিদের নাম পরিবর্তন করে আল আকসা জামে মসজিদ বলে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছিলেন। সাধারণ মুসল্লি ও স্থানীয়দের তোপের মুখে উজিরপুর থানা জামে মসজিদ হিসেবে পূর্ণবহাল করতে বাধ্য হন বর্তমান কমিটি।
অভিযোগকারী শাজাহান হাওলাদার বলেন, থানা জামে মসজিদের কয়েক লক্ষ টাকার ছোট বড় গাছ পানির দরে বিক্রি করে বর্তমান কমিটি। তিনি সহ বর্তমান সহ-সভাপতি গাছ কাটতে নিষেধ করলে। ঢাকায় অবস্থানরত মসজিদ কমিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খানের নির্দেশে ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে তড়িঘড়ি করে অল্প দামে বিক্রি করে দিন গাছ।
সাধারণ মুসল্লি ইমরান জানান, শত শত বছর ধরে উজিরপুর থানা জামে মসজিদ হিসেবে স্থানীয় মুসল্লিদের সহায়তায় মসজিদ পরিচালনা করে আসছেন মডেল থানা পুলিশ। তারই ধারাবাহীকতায় মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ কে সভাপতি করে কমিটি পরিচালনা করা হতো। কয়েক বছর পূর্বে মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন মডেল থানার সাবেক অফিসার্স ইনচার্জ সরোয়ার হোসেন,তার বদলি জনিত কারনে ওসি শিশির কুমার পাল অফিসার্স ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করলে তিনি আর মসজিদ কমিটির সভাপতি দায়িত্ব গ্রহন করেননি। এই সুযোগে স্থানীয় একটি মহল মসজিদ কমিটির সভাপতি সহ সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে। উজিরপুর মডেল থানা জামে মসজিদের নাম বিলুপ্ত করে আল আকসা জামে মসজিদ নামকরন করতে চান বর্তমান কমিটি। সাধারণ মুসল্লি তোপের মুখে তার সম্ভব হয়নি।
মসজিদ কমিটির বর্তমান সহ-সভাপতি কামাল হোসেন সবুজ সিকদার জানান, বর্তমান সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান কোন দিন এই মসজিদে নামাজ আদায় করেন নি। তিনি ঢাকায় অবস্থান করে এই মসজিদ দেখিয়ে বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করেন। এমনকি মসজিদের দুর্নীতির বিষয়ে যদি কেউ প্রতিবাদ করে। তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের প্যাড ব্যবহার করে হয়রানি করে থাকেন। তিনি আরো বলেন মসজিদের অর্থ আত্মসাৎ কে টার্গেট করে তিনি তার আপন ভাইকে সভাপতি থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। অবৈধভাবে সভাপতি হয়ে মসজিদের ইমাম ও কোষাধক্ষ্য সালাম মাস্টার কে নিয়ে যা খুশি তাই করে থাকেন। এমনকি মসজিদের প্রায় চার লক্ষ টাকার গাছ মাত্র দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি করেন এবং মুসল্লিদের মিথ্যা কথা বলে আগাম রেজুলেশন স্বাক্ষর নিয়েছেন।
অভিযুক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান জানান,ইমাম সাহেবের থাকার ঘর নির্মাণ ও পুকুরের ঘাটলা মেরামত আমি গাছ বিক্রি করেছি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খাইরুল আলম জানান, স্থানীয় ও গাছ ব্যবসায়ীদের ধারণা মোতাবেক মেহগনি, চাম্বল ও রেন্ট্রি গাছ মিলে বর্তমান বাজারে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা দাম হতে পারে কিন্তু বর্তমান সভাপতি এক লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছে। এই নিয়ে মুসল্লিদের ভিতর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল আহসান জানান, গাছ বিক্রয়ের অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/র.ই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :