সিলেটে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিকেলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সিলেট-তামাবিল সড়কে নির্বিঘ্নে বাস চলাচল করতে দেয়া এবং জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদকে গ্রেফতারে দাবিতে এ কর্মবিরতির ডাক দেয়া হয়েছে। বুধবার (১২ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে জেলায় কোনো বাস চলবে না।
সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম জানান, এ দুই দাবিতে গত দুদিন ধরে সিলেট-তামাবিল সড়কে কর্মবিরতি চলছে। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় আগামীকাল (বুধবার) ভোর থেকে পুরো সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিকদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সকল পরিবহন সংগঠন। তাই কাল থেকে সিলেটের কোনো রাস্তায় চলবে না কোনো ধরনের গাড়ি।
এর আগে জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে সিলেট-তামাবিল সড়কে সোমবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে চলছে গণপরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি। ওই সড়কে গত শুক্রবার বাসচাপায় পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় জৈন্তাপুর উপজেলার ১৭ পরগনার সালিশ কমিটির সড়কটিতে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদের গ্রেফতারের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাসের ধাক্কায় একটি ইজিবাইকের (টমটম) পাঁচযাত্রী নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন।
ঘটনার পরদিন (শনিবার) রাতে দরবস্ত বাজার মসজিদে সিলেটের বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগনার সালিশ সমন্বয় কমিটি জরুরি বৈঠক করে।
ওই বৈঠকে সিলেট-তামাবিল সড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের দাবি জানানো হয়। ছাঁটাইয়ের আগ পর্যন্ত ওই সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল করতে না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৯ জুলাই) সকাল থেকে বৃহত্তর জৈন্তাপুরের বাসিন্দারা সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস চলাচলে বাধা দেন। এতে নেতৃত্ব দেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ। এ ঘটনায় জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা রোববার বিকেলে বৈঠক করে সিলেট-তামাবিল সড়কে সোমবার ভোর থেকে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। এসময় শ্রমিক নেতারা আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমেদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
এদিকে সোমবার (১০ জুলাই) ফের জরুরি বৈঠক করে আজকের বৈঠকে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগনা সালিশ কমিটি। এতে তিনটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দাবিগুলো:
১. ১৭ পরগনার কাছে ময়নুল ও মালিক সমিতি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা চাওয়ার আগ পর্যন্ত উত্তর সিলেটে তামাবিল রোড, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট রোডে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
২. মালিক সমিতি নিজেই গাড়ি বন্ধ করেছে, তাই ক্ষমা চাওয়ার পর পুনরায় বাস চালাতে চাইলে ১৭ পরগনার অনুমতি নিয়েই বাস চালাতে হবে।
৩. বাস ব্যতীত সকল গাড়ি চলাচল করবে। যদি চলাচলে কেউ বাধা প্রদান করে তাহলে ১৭ পরগনার আপামর জনতা তা প্রতিহত করবে।
আগামী বৃহস্পতিবার ১৭ পরগনার পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :