বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় নৌকা প্রয়োজনীয়তা শুরু থেকেই আর সব অঞ্চলেই কম-বেশি নদী আছে। তাই নদ-নদীতে বর্ষার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়ে যায় নৌকার চাহিদা। কিন্তু এবছর পানি না থাকায় নৌকার তেমন চাহিদা নেই।
মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হরিরামপুর ও ঘিওরে বসে সপ্তাহিক নৌকার হাট। কালের বিবর্তনে বড় বড় পণ্যবাহী নৌকার বিলুপ্ত ঘটলেও মানিকগঞ্জে এখনো ডিঙি নৌকার হাট টিকে আছে। কিন্তু তুলনামূলক পানি না হওয়ার কারণে দিশেহারা হয়ে পরেছেন নৌকা ব্যবসায়ীরা। আষাঢ় মাসের শেষভাগেও নদ-নদী ও খাল-বিলে পানির দেখা মিলছে না।
দুইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট মানিকগঞ্জের ঘিওর হাটেও একই চিত্র। এ হাটেও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নৌকা বেচাকেনা জমজমাট হয়।
শনিবার (১৫ জুলাই) সরেজমিনে ঝিটকা হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতাই বেশি। বেচা-কেনা কম হলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি। অনেকই কিনছেন কেউ বা ঘুরে ঘুরে নৌকা দেখছেন।
নৌকার কারিগর অনিল বলেন, পানি না হওয়ায় বেচাকেনা অনেক কম। নদীতে পানি নাই, নৌকার চাহিদা নাই, আর আমাদেরও লাভ নাই। কারণ পানি বেশি হলে নৌকার চাহিদা বাড়ে, আমাদেরও কাজ বাড়ে ফলে লাভ একটু বেশি হয়। পানি কম হলে লাভ কম।
নৌকা কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, নৌকার দাম ঠিক আছে। তেমন বেশি পানি না থাকাই একটু কম দামেই নৌকা ক্রয় করতে পেরেছি। আমরা দুইটি নৌকা ছয় হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি।
নৌকা ব্যবসায়ী মো. আবু তালেব বলেন, পানি না থাকায় বেচাকেনা নাই, কম লাভে নৌকা বিক্রয় করছি। আজ হাটে ৩৫ টি নৌকা উঠাইছি মাত্র ৯ টি বিক্রয় করেছি। পানি হবে কিনা দুশ্চিন্তায় আছি চালান উঠাইতে পারলে বাঁচি।
হাটের আরেক ব্যবসায়ী সাঈদ মিয়া জানান, পানি না হওয়ার কারণে তেমন বেচা-কেনা নাই। আজ ৬০ টি নৌকা উঠাইছি যদি পানি থাকত তা হলে মোটামুটি ৪০ টা নৌকা বিক্রি করতে পারতাম কিন্তু আজ মাত্র ১৪ টি নৌকা বিক্রয় করেছি। পানি না থাকার কারণে তেমন বেচা কেনা নাই।
হাট ইজারাদার আসাদুর রহমান আসাদ জানান, হাটে নৌকা আছে কিন্তু বেচাকেনা নেই। এতে নৌকা ব্যবসায়ী এবং আমাদের দুজনেরই লস হচ্ছে। বেচাকেনা কম থাকায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে। আমরা যারা হাট ইজারা নিয়েছি, তারা তো পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি।
একুশে সংবাদ/সা.খ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :