বরিশালের উজিরপুরে ধামুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ ছয় মাস ধরে বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নতুন ভবনের কাজ পিলারে আটকে আছে এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
গত রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শোলক ইউনিয়নে ধামুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। মাঠের পশ্চিম পাশে পুরাতন ভবনে একটিতে অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং অপর কক্ষে পাঠদান করায় পাঠদান কক্ষের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা আসন সংকটে অনেকেই বসতে পারে না। এ ছাড়া নির্মাণধীন ভবনের নিচের বীম ও কলাম নির্মান রড বের হয়ে আছে। ফলে প্রকল্পে ব্যবহারিত রডে মরিচা পুড়ে গেছে। নির্মাণ কাজে ঠিকাদার গাফিলতি করে নয় মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও শেষ করতে পারেনি। প্রভাবশালী ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামত ও খাম খেয়ালী পানার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন।
বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে ধামুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় নির্মিত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ন হওয়ায় জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করেন।
বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল একটি নতুন ভবন নির্মানের জন্য অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় অন্যান্য ভবন ও অবকাঠামো (কোড নং- ৭০১৬) খাতের অধীনে সরকারী ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের নতুন ভবন নির্মান শীর্ষক প্রকল্প অর্থবছরের ২০২১-২২ সালে ধামুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। বরাদ্দের পরিমাণ ৮০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ফাউন্ডেশন চারতলা, তবে এখন নির্মাণ করা হবে একতলা। দরপত্র অনুযায়ী নয় মাসের ভিতর কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পুনরায় সময়ের আবেদন করে নির্মাণকাজ নিয়ে কালক্ষেপণ করছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয় মাঠে ফেলে রাখা হয়েছে বালু। রোদ-বৃষ্টিতে সিঁড়ি ও কলমের রডে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে একটি মাত্র পুরোনো পাকা ভবন রয়েছে। এতে তিনটি কক্ষ রয়েছে। ক্লাস পরিচালনার জন্য শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ হলে কিছুটা হলেও এ সংকট কেটে যেত।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাদিয়া ইসলাম, হাফসা আক্তার ও সোহানা আক্তার বলে, শ্রেণিকক্ষ সংকটে কখনো মাঠে ক্লাস করতে হয়। নতুন ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
ধামুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেড বিম ও কলাম নির্মাণ রড বের করে রেখেছে ছয় মাস। বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি কর্ণপাত করছেন না।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আনায়া এন্টারপ্রাইজ প্রোপ্রাইটর মো. বাবুল বলেন, ‘ভবনের কাজ করতে একটু সময় লেগেছে। আমার অনেকগুলো দপ্তরের কাজ চলমান রয়েছে। এই দপ্তরের কাজ করে টাকা পেতে সময় লাগে। যে পরিমাণ কাজ করেছি, সে পরিমাণ বিল তুলতে পারিনি। মাত্র সাত লাখ টাকার বিল তুলতে পেরেছি। তবুও বাকি কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে।
বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানপ্রধান একটি আবেদন করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একুশে সংবাদ.কম/র.ই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :