কত বিচিত্র আমাদেরই বাংলাদেশে বারমাসই কত ফুল ও ফল হয় প্রকৃতিতে। অপরূপ, নয়নাভিরাম দৃষ্টিনন্দন ফুল ও বহুবিধ ভেষজ ঔষধিগুণসম্পন্ন ফল চালতা। চালতা ফুলের বিকাশ ও পরিপূর্ণতা বড়ই বৈচিত্র্যময়।
চালতা ফল বহুবিধ ঔসধিগুণসম্পন্ন হলেও মূলত এর আচার দেশের নারীদের জন্য লোভনীয় মুখরোচক খাবার হিসাবে ব্যাপক সমাদৃত। যথাযথ উদ্যোগের অভাবে দিনে দিনে আবহমান গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এ গাছটি।
অতীতে শিবচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিস্ময়কর ও বহুবিধ ঔষধিগুণসম্পন্ন এই চালতা ফুল ও ফল দেখা গেলেও বর্তমানে এই ফুল ও ফল ক্রমেই গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, বহুবিধ ভেষজ ঔষধি গুণসম্পন্ন এ ফল পাকে বর্ষার পর। পাওয়া যায় শীতকাল পর্যন্ত। আষাঢ়-শ্রাবণে ফোটে চালতা ফুল। সুগন্ধি এ ফুলে পাঁচটি পাপড়ি থাকে। পাপড়িগুলো আঁকড়ে থেকে ফলে রূপান্তরিত হয়। এ ফুল সাদা রঙের। ফোটার পর ফুলে মৌমাছির আগমন ঘটে। মৌমাছিরা মধু আহরণ করতে গিয়ে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে বসে। এভাবেই চালতার পরাগায়ন ঘটে এবং ধীরে ধীরে সেটি একটি পরিপূর্ণ ফলে পরিণত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, এ উপজেলায় এক সময় দেশীয় জাতের ফল চালতার ব্যাপক ফলন ছিল। বিভিন্ন বাগানে পাকা চালতা গাছ থেকে পরার ভয়ে এবং চালতা বাগানের ভেতরে পরে থাকায় হাঁটা মুশকীল হয়ে যেত কিন্ত চিত্র এখন আর চোখে পরেনা। একটি চালতা ফলের গাছে বছরে একবারই ফল ধরে। প্রতিটি চালতা ফল স্বাভাবিকভাবে ২০০ থেকে প্রায় ৫০০ গ্রাম ওজন হয়ে থাকে।
দেশ সংগঠনের সভাপতি ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ‘একসময় গ্রামীণ জনপদের রাস্তার পাশে, পুকুরের ধারে ও বাড়ির আঙ্গিনা চালতা গাছ দেখা যেত। বর্তমানে সে দৃশ্য চোখে পড়ে না। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও প্রকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এই বৃক্ষ লাগানো প্রয়োজন । তা না হলে আগমী প্রজন্ম এ বৃক্ষ অপরূপ দৃশ্যে মুগ্ধ থেকে বঞ্চিত হবে।
শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ‘একটি চালতা ফলের গাছে বছরে একবারই ফল ধরে। চালতার ফুল সাধারণত রাতে ফোটে। চালতা গাছে ফুল ফোটার পর এক দিনের মধ্যেই ফুলের পাপড়ি নিস্তেজ হয়ে ঝরে পড়ে। একটি ফলে এক দিনের জন্যই পরিপূর্ণ একটি ফুল ফুটে ঝড়ে যায়। যেহেতু এ গাছ ওষুধি গুণাগুণসম্পন্ন, এর ফুল দেখতে অত্যন্ত সুন্দর, ফুলে সুগন্ধ আছে, পরিবেশবান্ধব এবং বিপন্ন তাই এই উদ্ভিদটিকে আমাদের প্রকৃতিতে রক্ষা করা উচিত।’
একুশে সংবাদ/এস.এম. দে হো/স ক
আপনার মতামত লিখুন :