পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান অঞ্চলে বাঙালি ও বাংলাদেশের ভূখন্ডকে আলাদা করার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। আদিবাসী নাম ধারন করে উপজাতীরা বর্হিবিশ্বে নিজেদের জানান দিতে চায়, যা সংবিধান পরিপন্থী।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) মাটিরাঙ্গা উপজেলা অডিটোরিয়ামে মাটিরাঙ্গা উপজেলা ও পৌর শাখার আয়োজনে এসএসসি জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও ক্রেষ্ট বিতরণ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাকরি, ব্যবসায়, উচ্চতর পড়াশোনার ক্ষেত্রে চরম বৈষম্য চলছে। এ অঞ্চলের মৌজা হেডম্যান, জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ এবং সার্কেলচীপ নিয়োগে বাঙ্গালীদের সাথে সাংবিধানিক সমতার বিধান মানা হয় না। যার কারণে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরা সাংবিধানিক ভাবে চরম বৈষম্যর শিকার। অথচ বাঙ্গালিরাই পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৃত আদিবাসী। স্বাধীনতা যুদ্ধসহ করেছিলাম বৈশম্যর বিরুদ্ধে এখনও পার্বত্য অঞ্চলে বাঙ্গালিরা বৈশম্যর শিকার হচ্ছি।
তিনি বলেন, ১৯০০ সালের হিলট্রাক্ট ম্যানুয়েল, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, পার্বত্য ভুমি কমিশন আইন ও পার্বত্য অঞ্চলের জন্য বলবৎ যোগ্য অনন্যা আইনে এ এলাকায় বসবাসরত বাঙালিদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করে তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করা হয়েছে। এ অঞ্চলে বাঙালিরা যেন নিজ দেশেই পরবাসী, তাদের যেন কোন অধিকার নাই।
তিনি আরো বলেন, আজকের এ শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, এরাই এক সময় এদেশের হাল ধরে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে,বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার না করে তোমরা নিজেদের পড়াশোনা মনযোগ দিয়ে যে সফলতা অর্জন করেছো,সে জন্য তোমাদের আন্তরিকতা অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আমাদের বহুমূখি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটাতে হবে,আমাদের মাঝে যার যতটুকু মেধা আছে,সে মেধাটুকু যেন আমরা যথাযত কাজে লাগাতে পারি,তাহলে আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারবো।তোমাদের জীবনের প্রথম ধাপটা কৃতকার্য হয়ে পেড়িয়ে গেছো,সামনের ধাপগুলো যেন আরো সহজে পার হতে পারো, তার জন্য এখন থেকেই তোমাদের প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে শিক্ষা তোমাদের সাংবিধানিক অধিকার, সে অধিকার তোমাকে কাজে লাগাতে হবে,মনে রাখবে বাবা মা তোমাদের সব চেযে কাছের ভালো বন্ধু, নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের পাশাপাশি বাবা মায়ের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ রাখতে হবে এবং নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে সামনের প্রতিটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে,তা হলে সাফল্য সম্ভব,যারা দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করে পড়াশুনা চালিয়ে যায়,তারাই একটা সময় সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌছতে পারে,একটা কথা স্বরন রাখবে দারিদ্র্যতা কখনো নিজের ইচ্ছে শক্তি ও প্রচেষ্টা কে দমিয়ে রাখতে পারে না,সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বর্হিবিশ্বে নিজের দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এটাই প্রত্যাশা তোমাদের কাছে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা পিসিএনপি`র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ রবিউল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং মাটিরাংগা পিসিএনপি`র পৌর সভাপতি মোঃ ওসমান চিশতির সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিএনপি`র চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি`র মহাসচিব মোঃ আলমগীর কবির, খাগড়াছড়ি জেলা পিসিএনপি`র আহবায়ক কমিটির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ আবু তাহের, কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল মজিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাটিরাংগা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান ডালিম, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মোঃ লোকমান হোসাইন, জেলা আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ নিজাম উদ্দিন, সদস্য সচিব মোঃ এস এম মাসুম রানা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম মাসুদ, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদ উল্লাহ, জেলা সভাপতি সুমন আহমেদ, মাটিরাংগা উপজেলা পিসিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম প্রমূখ।
বক্তব্য শেষে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষাথী মাঝে ফুল, ক্রেষ্ট, পুরস্কার ও আম গাছের চারা তুলে দেন প্রধান অতিথি। বিভিন্ন স্কুল হতে আগত শিক্ষক বৃন্দ, কৃতি শিক্ষার্থী বৃন্দ, অভিভাবক ও সাংবাদিক বৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
একুশে সংবাদ/আ.র.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :