AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সাইবার প্রতারণায় স্বপ্ন ভঙ্গ রাজশাহীর সাগর-এখলাসুরের


Ekushey Sangbad
আব্দুল বাতেন, রাজশাহী
০৪:৪৪ পিএম, ২৩ আগস্ট, ২০২৩
সাইবার প্রতারণায় স্বপ্ন ভঙ্গ রাজশাহীর সাগর-এখলাসুরের

রাজশাহী মহানগরীর ডাঁশমারী করিডোর মোড় এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে সাগর ইসলাম। বর্তমানে তিনি বেকার। বাবা- মায়ের চিন্তা ভাবনা ছিলো বিদেশে পাঠিয়ে বেকারত্ব ঘুচানো। সেই জন্য জমি বিক্রিও করেছিলেন। এমন সময় চাচা রতন ইসলাম ভাতিজাকে প্রলোভন দেখায় এতো টাকা দিয়ে বিদেশে যাওার দরকার নেই। বাড়িতে বসেইে তার চেয়ে বেশী টাকা ইনকাম হবে। তার চেয়ে দেশেই আল্টিমা ওয়ালেট অ্যাপে বিনিয়োগে লাখে ১২ হাজার টাকা লাভ পাওয়া যাবে। এই লোভেই সাগর ৪ লক্ষ টাকা তার চাচার হাতে তুলে দেন।

 

এখন লাভ তো দুরের কথা আসল টাকাও তার খোয়া গেছে। সম্প্রতি ওই অ্যাপটি বন্ধ হয়ে যায়। শুধু সাগর ইসলামই না এমনিভাবে ওই এলাকার অর্ধশত যুবক লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পথে বসেছেন।

 

সাগর ইসলাম বলেন, আমি কার কাছে টাকা চাইবো?। শুনছি ওই কোম্পনীর পালিয়ে গেছে। যে অ্যাপসটি ব্যবহার হতো সেটিও গুগল প্লে স্টোর থেকে উধাও হয়ে গেছে। আমার চাচার মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। সেই চাচাও নিজের ৭ লাখ টাকা খুয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, হটাৎ করেই এমনি বেশ কিছু ভুয়া কোম্পানী কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হওয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর পর আমরা বুঝতে পারি টাকা আর পাব না। এর সাথে আমার ভেঙে গেছে বিদেশ যাওয়ার স্বপ্নও।

 

একই এলাকার টাইলস মিস্ত্রী এখলাসুর রহমান। তার স্বপ্ন ছিল বড় লোক হওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে সে পৌনে ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিল একই এলাকার মাহবুবুর রহমান মুনায়েমের মাধ্যমে। একবার লাভের টাকা পেয়েছিলেন তিনি। তবে সেই লাভের টাকা পাওয়ার পর এমন ভাবে পুনরায় প্রলোভন দেখিয়েছিলো যে সেই টাকাটিও পুনরায় বিনিয়োগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন তিনি নিঃশ্ব।

 

টাইলস মিস্ত্রীর কাজ করে দিনে দিনে যে টাকা জমিয়েছিলেন তার সবটাই খুয়েছেন অ্যাপের ফাঁদে। একইভাবে ওই এলাকার সবুজ, বাদশাসহ বেশ কিছু যুবক ডাঁশমারীর মাহবুবুর রহমান মুনায়েমের প্রলোভনে বিনিয়োগ করে সর্বশান্ত হয়েছেন। এখন মুনায়েম বিমানে চড়ে ঢাকা যাওয়া আসা করেন। আর আমরা নিঃশ্ব; বলেন এখলাসুর রহমান।

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে মুনায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে বলেন, আমিও এক বন্ধুর মাধ্যমে প্রলোভিত হয়ে নিজেও অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছি। পরে অন্যদেরকেও বললে তারাও বিনিয়োগ করে। তবে এমন প্রতারণা শিকার হয়ে আমাদের এমন দশা হবে তা বুঝতে পারিনি। যারা আমাকে দোষ দিয়ে কথা বলছে সেটি ভুল বুঝে বলছে। আমিও তাদের মতই ভূক্তভোগী বলে দাবি করেন

মুনায়েম।

 

তিনি আরও জানান, আল্টিমা ওয়ালেটের মহানগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় অফিস ছিলো। সেখানে আরো সিনিয়র দুই-তিন জন বসতেন। তারা টাকাগুলো নিতেন। তবে সেই অফিস আর এখন নেই। রাতারাতি তারা অফিস বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। এছাড়াও উপশহর এলাকাতেও আরো দুটি অফিস ছিল বলেও জানান মুনায়েম।

 

এদিকে, অ্যাপে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়ে ডাঁশমারি এলাকার সবুজ আলী নামের এক যুবক বোয়ালিয়া থানায় গত ২৬ জুন মামলা করে। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখসহ ১৩ জনকে আসামী করা হয়। এর পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে মাহবুবুর রহমান মুনায়েম ও তার সহযোগি হৃদয় ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা হলেন, মাহবুবুর রহমান মোনায়েম (২৩), কাটাখালি থানার শ্যামপুর পশ্চিমপাড়ার সাহাবুদ্দিনের ছেলে হৃদয় ইসলাম (২২), নগরীর নিউমার্কেটের এশিয়ান কুকারিজের মালিক আব্দুল মতিন (৪৮), মাহমুদুল (৪০), রাকিব (৪৩), স্কুল শিক্ষক আল আমিন (৩৫), পবা উপজেলার নওহাটা বাজারের সাব্বির ইসলাম (২০) ও মোস্তাকিম ইসলাম (২১)। এদের মধ্যে সাব্বির ও মোস্তাকিম এখনো পালাতক।

 

একই ভাবে ‘‘মুভি অ্যাপ’’ নামের আরেকটি অ্যাপে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়েছে শতশত মানুষ। মুভি অ্যাপের রাজশাহীর মহানগরীর শিরোইলে অফিস খুলে মানিক নামের এক যুবক এই প্রতারণার কার্মকান্ড চালায়। তার মাধ্যমে ওই অ্যাপে গোদাগাড়ীর প্রেমতলী এলাকার শতাধিক মানুষ বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়। এ নিয়ে নগরীর চন্দ্রীমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়। এ মামলার পর মানিক গ্রেপ্তার হয়।

 

একুশে সংবাদ/আ.ব.প্র/জাহা

Link copied!