আসকান প্রামানিকের অভাবের সংসার। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন, ছেলেরা বিয়ে করে পৃথক সংসার পেতেছেন। নিজের তিন বেলা খাবার যোগাতে তাকে অন্যের অনুগ্রগের পাত্র হতে হয়, সেখানে চোখের চিকিৎসা করানো দিবাস্বপ্নের মতো। ৫ বছর আগে বামচোখের ছানির অস্ত্রপচার করিয়েছিলেন কিন্তু তা সফল না হওয়ায় সে চোখে দেখতে পাননা।
ডান চোখেও ছানি পরেছে কিন্তু টাকার অভাবে অস্ত্রপচার করতে পারছেন না। গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে চক্ষু ক্যাম্পের প্রচার শুনে এসেছেন চোখের চিকিৎসা নিতে। আসকান প্রামানিকের বয়স ৭৫ বছর। তিনি উপজেলার খুবজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। শুধু আসকান প্রামানিক নয়, তাঁর মতো তজির উদ্দিন, শরিফ প্রামানিকসহ অন্তত শতাধিক রোগী এসেছেন চোখের চিকিৎসা নিতে।
নাটোরের গুরুদাসপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সষ্টিটিউটের দিনব্যাপী ন্যাশনাল আই কেয়ার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে শুক্রবার খুবজীপুর অধক্ষ্য আব্দুল হামিদ কমপ্লেক্সে চক্ষু রোগী বাছাই করা হয়।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাছাইকৃত রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিনামুল্যে লেন্স সংযোজন,ছানি অস্ত্রপচার,ওধুষ ও চশমা সরবরাহ,থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রাথা হয়েছে।
সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চোখের নানা রোগের ব্যবস্থাপত্র ও অস্ত্রপচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এলাকার অন্তত ১শ রোগী চিকিৎসা নিতে নাম নিবন্ধন করেছেন।
সকালে চক্ষুক্যাম্প উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচীব সাইদুর রহমান। এসময় জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান,উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম,চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার শ্যামল,শহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম জানান,চোখ অমুল্য সম্পদ। এলাকায় এ রোগীর সংখ্যাও অনেক। কিন্তু গরীর রোগীদের বে-সরকারী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেয়া কিংবা অস্ত্রপচার কর নো কষ্টসাধ্য। মুলত চক্ষু রোগীদের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দেবার লক্ষ্যেই এ ক্যাম্পের আয়োজন।
স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচীব সাইদুর রহমান জানান,স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া প্রতিটি মানুষের অধিকার। সরকার মানুষের এ মৌলিক চাহিদা পুরণে আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। সরকারী হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে ভালো সেবা পাওয়া সেটা এখন সবাই বিশ্বাস করে। চক্ষুক্যাম্প আয়োজনের মাধ্যমে এলাকার গরীরসহ সবধরনের রোগীরা উপকৃত হবেন।
একুশে সংবাদ/জ.প.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :