‘‘২ হাজার টাকা ৬ তারিখ দিতে হবে। না হলে ৭ তারিখ থেকে আপনাদের ছেলে মেয়ে হারায় গেলে আমার কিছু কারার থাকবে না। আমি বা আমরা কে সেটা না খুঁজে, আমি যা বলছি সেটা করার চেষ্টা করেন তাহলে কিচ্ছু হবে না। অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে ফেলায়েন না। যদি ছেলে মেয়ের মঙ্গল চান তাহলে লোয়া পুকুর সোলার লাইটের সাথে যে বক্স থাকবে। নিজের টাকার সাথে একটা কাগজে নিজের নাম লিখে ওই বক্সে ফেলান আর নিজের বাচ্চাকে সুরক্ষিত করুন ধন্যবাদ।’’
বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নে সন্তানদের অপহরণের হুমকি দিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা দাবি করে উপরের কথাগুলো লিখে বাড়ির দেয়ালে লিফলেট সেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রত্যেককে নিজের টাকার সাথে একটা কাগজে নিজের নাম লিখে স্থাপিত বাক্সে ফেলার ব্যাপারে নির্দেশনাও দেয় শ্যাডো (Shadow) নামের এই দুর্বৃত্তদের চক্র।
রোববার সকালে পাঁচ শতাধিক বাড়ির বেড়া ও দেয়ালে এমন পোস্টার দেখে আতংকিত হয়ে পড়েন চার গ্রামের প্রায় ১২শ পরিবার। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের জসিম মিয়া, সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েই টিনের বেড়ায় দেখতে পান এই পোস্টার। যেখানে লেখা, সন্তানকে হারাতে না চাইলে টাকা দিতে হবে। আর বিষয়টি রাখতে হবে গোপন।
অভিভাবক জসিম জানান, বাড়ির সামনে এমন হুমকি দেওয়া লিফলেট দেখে ভীত হয়ে পড়েছেন তিনি। এ ঘটনার পর অনেক পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুল-মাদ্রাসায় পাঠাননি। রাতের আধারে এমন পোষ্টার লাগানো হয়েছে।
পরে গ্রামবাসীরা নিজেরদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন শুধু তাদের গ্রামেই নয় আশপাশের আরও চারটি গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িতে চাঁদা দাবি করে এমন পোস্টার লাগানো হয়েছে। এই ইউনিয়নের চার গ্রামের ৫০০ বেশি বাড়িতে এমন পোস্টার সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
আর্থিক অবস্থা অনুসারে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্তও দাবি করা হয়েছে। সাতদিন সময় দিয়ে, নির্দিষ্ট স্থানে টাকা না পৌঁছালে সন্তান অপহরণের দেওয়া হয়েছে হুমকি। এতে ছেলে-মেয়েদের স্কুল-মাদ্রাসায় পাঠাননি অনেক অভিভাবক।
এদিকে, ভীতি ছড়িয়ে গ্রামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় একটি চক্র বলে ধারনা করছেন মুরইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল। এ ঘটনায় সতর্কতার সাথে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার পাশাপাশি জড়িতদের শনাক্তে মাঠে নেমেছে বলে জানিয়েছেন জেলা সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ। শ্যাডো নামের ব্যানারে ছাপানো এই পোস্টার নিয়ে চারটি গ্রামের প্রায় ১২’শ পরিবারের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :