ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একদিনের অতি ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ২৭৪ কোটি টাকার মাছ। সার্বিক হিসাবে-নিকাশের পর এ তথ্য জানিয়েছেন গৌরীপুর উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি চৌদ্দশত হেক্টর ফসলি জমি ও ১০০ হেক্টর সবজি চাষের জমি নষ্ট হয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে। বিভিন্ন গ্রামের ৮০ ভাগ সড়ক এখনও ডুবে আছে পানির নিচে। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে টানা বর্ষণে গৌরীপুরে হাজার হাজার পুকুর ডুবে যায়। ডুবে গেছে ফসলি জমি, সবজি বাগান ও অসংখ্য সড়ক, এতে পানি ঢুকে যায় বাসা-বাড়িতে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন মৎস্য চাষিরা।
সহনাটি ইউনিয়নের দোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের মৎস্য হ্যাচারীর মালিক নুরুল আবেদীন বলেন, ৮টি পুকুর ডুবে গেছে, পাড়ের উপর দুই ফুট পানি, নিঃস্ব হয়ে গেছেন তিনি। আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বোকাইনগর ইউনিয়নের দাড়িয়াপুর গ্রামের আঃ ছালাম জানিয়েছেন বাড়ির পাশে দুইটি পুকুরে ৪ লাখ শিং মাছ চাষ করেছিলেন, এ মাসেই বিক্রির কথা, পুকুরগুলো রাতের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে। প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাছ চলে গেছে তাঁর।
ঘোষপাড়া মহল্লার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন- ১৪টি পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন তিনি, সবগুলোই ডুবে গেছে, এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিনি।
গৌরীপুর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাবে অনুযায়ী উপজেলায় মোট পুকুরের সংখ্যা নয় হাজার ৪০৩টি। ভারী বর্ষণে ৭০ ভাগ পুকুর ডুবে গেছে, এছাড়াও ৫৭টি হ্যাচারী রয়েছে, বিভিন্ন পুকুরে যাদের প্রচুর বোর্ড মাছ ছিলো, পুকুর ডুবে সব মাছ বের হয়ে গেছে। এতে চাষীরা অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফৌজিয়া নাজনীন জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাতের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক পুকুর ডুবে গেছে, ফসলি ও সবজির জমি নষ্ট হয়েছে। আমরা শুক্রবার ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত একটি প্রাথমিক জরিপ করেছি। এতে দেখা গেছে- ২৭৪ কোটি টাকার মাছ, ১৪শত হেক্টর ফসলি জমি ও ১০০ হেক্টর সবজি চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
একুশে সংবাদ/হ.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :