নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ইতোমধ্যে শিল্পীদের দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় পূর্ণরুপে ফুটে ওঠছে দৃষ্টি নন্দন অধিকাংশ প্রতিমা।
সারা দেশের ন্যায় নেত্রকোনার কেন্দুয়াতে ও চলছে ৫১ পুজা মন্ডপে প্রতিমা গড়ার কাজ। এ কাজে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
এ নিয়ে বিভিন্ন মৃৎশিল্পিরা জানান, দেবী দূর্গা আসছেন অন্ধকার আচ্ছন্ন পৃথিবীকে আলোকিত করতে। ঢাক, ঢোল, শংখ ধ্বনী আর উলুধ্বনী দিয়ে দেবী দূর্গাকে বরন করে নেয়ার অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভক্তরা। নিজেদের মনের মতো করে প্রতিমার নকশায় নিজেকে সেরা শিল্পী হিসেবে তুলে ধরতে দিন রাত পরিশ্রম করে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা।
প্রতি বছরের মতো এবারও ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী ২০ অক্টোবর থেকে শারদীয় দূর্গোৎসবের আয়োজন শুরু হবে। প্রতি বছর মহাআনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও কোভিড-১৯ এর কারণে গত দু‘বছর বাংলাদেশে ভালোভাবে এ পূজা উপভোগ করা যায়নি। এবার পুর্বথেকেই আয়োজন শুরু হওয়ায় ভক্তদের মধ্যে বেশ আনন্দ বিরাজ করছে।
উপজেলার অবিভক্ত ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রয়াত নলীনি রঞ্জন সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সাজিউড়া দেব মন্দিরে কর্মরত কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ধামিহা গ্রাম থেকে আসা মৃৎশিল্পী টুটন আচার্য্য জানান, আমি দীর্ঘ ২০বছর যাবত প্রতিমা তৈরীর কাজ করে আসছি, আমার বাপ, দাদারাও এ কাজে নিয়োজিত ছিলেন, তাদের উত্তরসুরী হিসেবে আমিও এই কাজ করছি। প্রতি মন্ডপের প্রতিমা তৈরী বাবদ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক গ্রহন করে থাকি।
উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজল সরকার বলেন, সরকারী নির্দেশনা মেনে কেন্দুয়া উপজেলায় এবার ৫১টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ উৎসব সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল এমপি মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসবকে সামনে রেখে শহরে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সকল মন্ডপের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নিয়ে প্রস্তুতিমুলক সভা করেছি।দুই এক দিনের মধ্যেই ৫১ টি পুজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। আশা করছি কোনপ্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে পুজা সম্পন্ন করতে পারবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী জালাল বলেন, শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে কেন্দুয়ায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। প্রত্যেকটা পূজা মন্ডপে সরকারি বিধি মোতাবেক পুজা সম্পন্ন হওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দকে নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার যেন কোন অবনতি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নের্তৃত্বে একটি টিম সকল পুজা মন্ডপ পরিদর্শন করবেন। সকলের সহযোগিতা পেলে আশা করছি শারদীয় পুজা ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারবো বলেও জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :