সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চার জনের একই পরিবারের তিন জন শারীরিক প্রতিবন্ধী। সদর উল্লাপাড়া ইউনিয়নের বাখুয়া গ্রামের এরা হলেন- মহির উদ্দিন ( ৩৭) ও তার দুই সন্তান মরিয়ম খাতুন ( ১৬), শরিফুল (১৪)। গরীব পরিবারের গ্রামীণ গৃহবধু লাইলী খাতুন শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী ও দুসন্তানকে নিয়ে সংসার জীবনে কঠোর খাটুনি করছেন। তিনি দুই সন্তানকে পড়ালেখায় শিক্ষিত করতে চান। এদিকে গৃহবধু লাইলী খাতুনের শশুর ছুরমান উদ্দিন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।
উল্লাপাড়া উপজেলার বাখুয়া বসতি শারীরিক প্রতিবন্ধী মহির উদ্দিনের বসতভিটে বাড়ী ছাড়া আবাদী জমি নেই। তিনি জন্ম থেকেই একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। পেশায় অটো রিকসা ভ্যান চালক।
সরেজমিনে বাখুয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কাচা সড়কের পাশে মহির উদ্দিনের বসতবাড়ি। প্রায় আঠারো বছর আগে মহির উদ্দিনের সাথে লাইলী খাতুনের বিয়ে হয়। প্রতিবেদককে গৃহবধু লাইলী খাতুন বলেন, তার গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তান দুজনই জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী স্বামী মহির উদ্দিনের অটো রিকসা ভ্যান চালিয়ে আয়ের টাকায় তাদের সংসার চলে।
তিনি আরো বলেন, সন্তান দুজনকে পড়ালেখা করাচ্ছেন। এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুজনে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। প্রতিবন্ধী সন্তান দুজনের জন্য আলাদা হুইল চেয়ার আছে। বাড়ীতে ভাই বোন দুজন হুইল চেয়ারে বসে সময় পার করে এবং মায়ের ও তাদের দাদীমার সাহায্যে চলাচল করে থাকে। গৃহবধু লাইলী খাতুন দুজনকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে পড়ালেখায় বিদ্যালয়ে নেওয়া আনা করেন। প্রতিবন্ধী তিন জনই সরকারী ভাতার টাকা পায়। বিভিন্ন সময়ে স্বামী ও সন্তানদের চিকিৎসায় টাকা খরচ করতে হয়।
গৃহবধু লাইলী খাতুন বলেন, সংসারের অভাবের মাঝেও পড়ালেখা শিখিয়ে সন্তান দুজনকে শিক্ষিত করতে চান। সংসারের আয় বাড়াতে গরু লালন পালনে তার আগ্রহ আছে। গরু কিনে লালন পালনে টাকা তাদের নেই। সরকারী প্রশাসন এবং কোনো সাহায্য সংস্থা, ব্যক্তিগতভাবে কেউ নগদ টাকা দেওয়া , গরু কিনে দেওয়া কিংবা পুজি দিয়ে দোকান করে দিলে নেবেন বলে জানান। গৃহবধু লাইলী খাতুনের শশুর ছুরমান উদ্দিন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি নিজ বাড়ীতে ছোটো একটি মুদি দোকানের আয়ে সংসার চালান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও ) মোঃ উজ্জ্বল হোসেন বলেন পরিবারটির সংসারের আয় বাড়াতে গরু লালন পালনে কিংবা কম পুজির অন্য কোনো ব্যবসায় সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।
একুশে সংবাদ/সা.স.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :