সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর ঘাসের ওপর ছড়িয়ে পড়া শিশিরবিন্দু জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আর শীতের শুরুতেই রামগঞ্জে লেপ-তোষক, জাজিম তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে হয়ে পড়েছেন কারিগররা। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তবে দেশে কার্তিক মাসের শেষের দিক থেকেই শীতের আগমন শুরু হয়। তাই শীত মোকাবিলায় ব্যবসায়ীরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরি করে দোকানে মজুদ করে রাখছেন।
ঋতু বৈচিত্রে রাতে কুয়াশা আর দিনে হাল্কা গরম থাকলেও ঠান্ডার প্রকোপ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। পাতলা কাঁথার মানছে না শীত। তাই হিমেল ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন লেপের উষ্ণতার। শীতের তীব্রতা বাড়ার আগেই মানুষ ভিড় জমাচ্ছে লেপ তোষক তৈরির বেডিং স্টোরগুলোতে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে উপজেলার হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটে। হিমেল শীতের পরশ থেকে উষ্ণতা পেতে কেউ পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক করছে। আবার কেউ নতুন তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। অন্যদিকে অনেকে উঠিয়ে রাখা লেপ-তোষক বের করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।
শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে দোকানগুলোতে লেপ-তোষক বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তা ঘাটে। হিমেল শীতের পরশ থেকে উষ্ণতা পেতে কেউ পুরোনো লেপ-তোষক, বালিশ ঠিকঠাক করছে। আবার কেউ নতুন তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। অন্যদিকে অনেকে উঠিয়ে রাখা লেপ-তোষক বের করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দিন রাত সমান তালে শীতকে সামনে রেখে রেডিমেড দোকানে লেপ-তোষক তৈরির কাজে কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বর্তমানে বাজারে শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৬০ থেকে ৬২০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩৬০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সাদা তুলা ১১০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা করে দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় তুলার দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। প্রতিপিস লেপ- তোষক তৈরিতে খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বেড়েছে। মাঝারি ধরনের একটি লেপ বানাতে খরচ হচ্ছে ১২০০ থেকে দুই হাজার টাকা। তোষক বানাতে ১৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। তবে বিভিন্ন রকমের দামী-কমদামী তুলার প্রকারভেদে লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি হয়ে থাকে।
লেপ-তোশক তৈরির কারিগররা জানান, এলাকার সচ্ছল ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি বছরই নতুন লেপ কেনেন। শীতের আগেই নতুন লেপ ও তোশকের অর্ডার দেন তারা। তাই, হাতে প্রচুর কাজ তাদের। এসব কাজ করেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আর নিম্ন আয়ের লোকজন শিমুল তুলা এড়িয়ে চলেন। কারণ শিমুল তুলা দিয়ে তৈরি করা লেপের খরচ অনেক বেশি। এর অর্ধেক দামে গার্মেন্টস তুলায় তৈরি লেপ পাওয়া যায়। সম্প্রতি লক্ষ করা যায়, বাজার-মহল্লার দোকান ছাড়াও দোকানিরা ফেরিওয়ালার মাধ্যমে গ্রামে, পাড়া-মহল্লায় লেপ-তোশক ফেরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করছেন।
এ বিষয়ে গ্রামবাসী জানান, তারা সময়ের অভাবে হাটে-বাজারে যেতে না পারলেও ফেরিওয়ালারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের লেপ-তোষক বিক্রিতে সাহায্য করছেন। ক্রেতারাও সহজে হাতের নাগালে পেয়ে যাচ্ছেন তাদের কাক্সিক্ষত লেপ-তোষক।
লেপ কিনতে আসা জাহাঙ্গীর, মিজান, আরমানসহ কয়েকজন বলেন, শীত মৌসুম চলে আসছে। এখন আর পাতলা কাঁথায় শীত মানছেনা। তাই পুরোনো লেপ নতুন করে তৈরি করতে এসেছি। কাপড় ও তুলার দাম বাড়ার কারণে খরচ বেশি লাগছে। গত বছর যে লেপ ১৩০০ টাকায় নিয়েছি এবছর সমমানের লেপই ১৬০০ টাকায় কিনতে হলো।
লেপ-তোষক, জাজিম ব্যবসায়ী আঃ রহিম বলেন, প্রতিটি লেপ-তোষক বানাতে মজুরি হিসেবে ২’শ থেকে ৩’শ টাকা। বর্তমান বাজারে গার্মেন্টস তুলা দিয়ে তোষক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২’শ ৫০টাকা, জাজিম ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫’শ টাকা এবং কার্পাশ তুলা দিয়ে লেপ ১হাজার ৬’শ থেকে ২হাজার ১’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া কার্পাশ তুলা দাম বেশি হওয়ায় অনেকে গার্মেন্টসের তুলা দিয়ে লেপ তৈরি করে থাকেন। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম থাকায় চাহিদাও বেশি থাকে। এসময় অনেক কারিগর ও ব্যবসায়ী শীত আসার আগেই পর্যাপ্ত পরিমাণে লেপ-তোষক তৈরি করে মজুদ রাখেন। শীত আসলেই কারিগরদের কাজের চাপও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আর তারাও বাড়তি আয়ের জন্য দিনরাত কাজ করেন। ফলে দোকানগুলোতেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়।
একুশে সংবাদ/র.ই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :