গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গুপ্তধন ভেবে বোতলসদৃশ একটি বস্তু কাটতে গেলে তাতে বিস্ফোরণ ঘটে। আর তাতেই এক যুবকের কবজি থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় আরও আহত হয়েছেন যুবকের বাবা-মা ও আরেক ভাইসহ আরও তিনজন।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের জিগাবাড়ি গ্রামে এ বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটে।
আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুবর্ণা ইসলাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আহতরা হলেন- জিগাবাড়ি গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে ৩৮ বছর বয়সী ভুট্ট মিয়া, তার স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী পারভীন বেগম, বড় ছেলে ২৮ বছর বয়সী ফারুক মিয়া ও ছোট ছেলে ১৬ বছর বয়সী রিপন মিয়া। এদের মধ্যে ফারুকের কবজি থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
পুলিশের ধারণা বিস্ফোরিত বস্তুটি সর্বশেষ বন্যার সময় ভারত থেকে পানিতে ভেসে আসা কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য।
পুলিশ জানায়, দুপুরে বাবা-ছেলে ভুট্টাখেতে কাজ করতে গিয়ে বোতলসদৃশ একটি বস্তু কুড়িয়ে পান। তারা সেটিকে গুপ্তধন ভেবে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে প্লাস দিয়ে খোলার চেষ্টা করেন। তাতে ব্যর্থ হয়ে পরে দা দিয়ে কাটতে গিয়ে এক পর্যায়ে জোরে আঘাত করার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বিস্ফোরিত হয়। এতে পাশে থাকা ফারুকের বাবা-মা ও ভাইসহ মোট চারজন আহত হন। শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। তাদের ঘটনার পরপরই সুন্দরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায় প্রতিবেশীরা। পরে সেখান থেকে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘গেল বন্যার সময় ভারত থেকে আসা পানির সঙ্গে সুন্দরগঞ্জের তিস্তার আশপাশের এলাকায় মরদেহ, ড্রাম, গ্যাসের চুলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও গাছসহ বিভিন্ন দ্রব্য ভেসে আসে। এখানকার স্থানীয়রা সেগুলো পেয়েছে। আমরা ধারণা করছি, এটি ওই সময়ে আসা একটি বিস্ফোরক জাতীয় দ্রব্য ছিল যা বন্যার পর ভুট্টার জমিতে আটকে যায়।’
সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক সুবর্ণা ইসলাম বলেন, ‘আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিস্ফোরণে আহত একই পরিবারের চারজন সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তিনজনকেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তাদের মধ্যে ফারুক নামের যুবকটির কবজি থেকে হাতের বাকি অংশ আমরা পাইনি। ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। এছাড়া তার ছোট ভাই রিপন চোখে প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে গুরত্বর আহত হয়; তাদের বাবার অবস্থাও ভালো ছিল না। পরিবারের তিনজনকেই রংপুরে পাঠানোয় পারভীন বেগমও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তাদের সঙ্গেই গেছেন।’
একুশে সংবাদ/ন.ব.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :