ঝালকাঠির রাজাপুরের বারবাকপুর আমীনবাড়ী এলাকায় জনদূর্ভোগ লাঘবে সেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে এলাকার প্রায় অর্ধশত মানুষ একাত্রিত হয়ে রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবাকপুর দারুস সুন্নত দ্বীনিয়া এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মাওলানা আব্দুল কবির দীর্ঘ ২২ বছর ওই জায়গাটি দখল করে দেয়াল তুলে এলাকাবাসীর হাঁটার পথ বন্ধ করে রাখেন। এতে এলাকাবাসীর হাঁটাচলা, কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র,অসুস্থ রোগী আনা-নেওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হতো।
এলাকাবসী স্বেচ্ছায় বালু দিয়ে রাস্তা নির্মানের কাজে বাধাঁ দিতে পূর্বের দখলদার মাওলানা আব্দুল কবির পুলিশ প্রশাসনের দারস্থ্য হলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর কাঠালিয়া সার্কেল) মো.মাসুদ রানা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।
স্থানীয় আল-আমিন ফরাজি,সাইফুল ফরাজি, কুদ্দুস হাং, হেলাল উদ্দিন হাং সহ একাধিক ব্যক্তি জানায়, কিছুদিন আগে এলাকাবাসী স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যানসহ গণমান্য ব্যক্তি এবং রাজাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তা আমলে নিয়ে সত্যতা যাচাই করে গত ২৫ জুলাই তৎকালীন এসিল্যান্ড ফারজানা ববি মিতু এক সপ্তাহের মধ্যে মাওলানা আব্দুল কবির’কে দেয়াল উচ্ছেদ করার নোটিশ দেন এবং সার্ভেয়ার সহ সরজমিনে এসে জমি পরিমাপ করে বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু মাওলানা আব্দুল কবির নোটিশের তোয়াক্কা না করে আদালতে নিজের সম্পত্তি দাবি করে মামলা দায়ের করলে আদালত উচ্ছেদে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।স্থানীয়রা ভূমি অফিসের দেওয়া উচ্ছেদ নোটিশ আদালতে পেশ করলে আদালত আব্দুল কবিরের পক্ষে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেন। কারণ কবিরের মামলায় দাগ নং-৮২৬ আর ভূমি অফিসের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা নোটিশে দাগ নং-৮৩১। তারপরও আব্দুল কবির রাস্তার সম্পত্তি তার দখলে রেখে দেয়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য জামি পরিমাপ করে সীমানা পিলার বসিয়ে দেয়। সম্পত্তির পরিমাপ বুঝে পেয়ে আমরা শেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মানের কাজ শুরু করি।
জানতে চাইলে মাওলানা আব্দুল কবির, এই সম্পত্তি আমাদের। একটি মহল তাদের পেশিশক্তির জোরে আমাদের সম্পত্তিতে পিলার বসিয়েছে। ৮২৬নং দাগের জমি নিয়ে বর্তমানে মামলা চলমান। তবে রাস্তার সম্পত্তি ৮৩১নং দাগের। তাহলে ওই জমি কেন দখল করে রেখেছেন এমন প্রশ্নে আব্দুল কবির বলেন, ৮৩১নং দাগের কিছু সম্পত্তি ভুলবশত রেকর্ড হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুজ্জামান মধু বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। নতুন করে বিজ্ঞ আদালত, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও সার্ভেয়ার যেখানে সীমানা নির্ধারণ করে দিবে আমরা সেখান থেকে পুনরায় রাস্তা নির্মান শুরু করবো।
এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) মাসুদ রানা জানান, এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। সরকারী সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা নির্ধারণের আদেশ পাওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে স্থীতিশীল অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :