চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বহিপাড়া গ্রামে দাফনের তিন মাস ৭ দিন পর কবর থেকে এক গরু ব্যবসায়ীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মেডিকেল অফিসার ও পুলিশের উপস্থিতিতে শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে বহিপাড়া গোরস্থান থেকে এই মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
গত ১৮ আগস্ট সকালে নিজ বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বহিপাড়া গ্রামের মৃত তাহির উদ্দিনের ছেলে গরু ব্যবসায়ী সমসের আলীর মরদেহ উদ্বার করে স্থানীয়রা। ঘটনার দিন পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহ দাফন করা হয়। দাফনের আট দিন পর ২৬ আগস্ট নিহত শমসের আলীর স্ত্রী জেসমিন বেগম নিহতের ভাই শকুর আলী, তার স্ত্রী লিমা বেগম ও চাচাতো ভাতিজা রানা আলীকে আসামী করে মামলা করেন।
নিহতের পরিবারের স্বজনদের দাবি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে সমসের আলীকে। জানা যায়, মামলায় আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। আদালত তদন্তের কাজে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়। শনিবার মরদেহ উত্তোলন করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহতের স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পরিবারের সবাই মিলে রাজশাহীতে একটি দাওয়াতে যাওয়ায় বাসায় একায় ছিলেন গরু ব্যবসায়ী সমসের আলী। ১৮ আগস্ট সকালে বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্বার করা হয়। সেদিনই পরিবারের লোকজন বাসায় ফিরে আসার পর বিকেলে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
ঘটনার পর নিহত শমসের আলীর স্ত্রী জেসমিন বেগম আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ০৩ সেপ্টেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতের বিচারক ঈশিতা শবনম বরাবর মামলার তৎকালিন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. জালাল উদ্দিন সমসের আলীর মরদেহ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের আবেদন করেন।
মামলার বাদী ও মৃত সমসের আলীর স্ত্রী জেসমিন বেগম জানান, আসামীদের কথাবার্তা ও মৃত্যুর আলামতে বুঝতে পারা যায়, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। সম্পত্তি অবৈধভাবে গ্রাস ও ভোগ দখল করার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। পরে থানা মামলা না নিলে আদালতে মামলা করেছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাশেম আলী জানান, আদালতে স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করে তিনজন আসামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন জেসমিন বেগম। পরে গোমস্তাপুর আমলী আদালতের বিচারক কবর থেকে লাশ তোলার নির্দেশ দেন। তদন্তের স্বার্থে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেডিকেল অফিসারের উপস্থিতিতে লাশ তুলে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোমস্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আদালতের নির্দেশে একজন মেডিকেল অফিসার ও পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মরদেহ উত্তোলনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. মো. ইসমাইল হোসেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ নিহতের পরিবারের স্বজন ও স্থানীয়রা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :