কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের বসতবাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাটসহ জবরদখল করা হয়েছে। আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিকসহ গংদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এসময় আহত হয়েছেন নারীসহ ৯জন। পরে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে রাজীবপুর থানায় ৩৭জনের নামে মামলা হয়েছে। সোমবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের উত্তর কোদালকাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের স্ত্রী নাজমা বেগম (৫২) ফুফাতো ভাই রুস্তম আলী (৬০) ও তার স্ত্রী হাওয়া বেগম (৫৫), চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম (৩৫), ছোট বোন আমেনা বেগম (৬০), ভাগিনা আনোয়ার হোসেন (৪৫), সাজেদুল ইসলাম (২৭), ভাই মকবুল হোসেন (৬০) ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী বাছিরন বেওয়া (৪৫)।
বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার কোদালকাটি মৌজার জেএল নম্বর ৩০, এসএ খতিয়ান নম্বর ৩৫৯ ও ১০৫৩ নম্বর দাগে ১৪ একর ৩৬ শতাংশ ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে উত্তর কোদালকাটি এলাকার আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিক গংদের সঙ্গে। বিষয়টি একাধিক বার মিমাংসা করার চেষ্টা করেন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা। তা না মেনে জমি জবর দখলের পায়তারা করে আসেন তারা। এরই জের ধরে সোমবার সকাল ১১টার দিকে দলবদ্ধ হয়ে ধারালো বেকি, ছুরি, সাবল, রাম দা, লোহার রড ও লাঠিশোটা নিয়ে তাঁর বসতবাড়িতে হামলা এবং ঘরবাড়ি ভাংচুর করে আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিক, শাহাদাৎ হোসেন, ইউননুছ আলী ও শফিকুল ইসলামসহ তাদের লোকজন। এসময় তাঁর বাড়িতে ট্রাংকের ভেতরে রাখা নগদ ছয় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়া তিনিসহ স্বজনদের ১০টি বসতঘর ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে নিয়ে যায় তারা। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এসময় বাধা দেওয়ায় তাঁর পরিবারের সদস্য রুস্তম, রফিকুল, আমেনা, আনোয়ার, হাওয়া বেগম ও নাজমাকে এলোপাথারি মারপিট করে আহত করা হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় আবুল কালাম, মোজাম্মেল হক, সাহার আলী ও সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, বীর মুক্তযোদ্ধা আব্দুল জলিলের বসতবাড়িতে জোর করে জবরদখল করতে গিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিকের লোকজন। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের পরিবারের লোকজন বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা করেন তারা। এতে নারীসহ আহত হন ৯জন।
বিষয়টি জানতে চাইলে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের জমিতে জবরদখল করে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল। এ কারণে আমরা ঘর-দরজা ভেঙে দিয়ে জমি দখল করেছি। একই কথা বলেন আব্দুল কুদ্দুস প্রামাণিকও।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজীবপুর থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দু’পক্ষের অভিযোগ পেয়েছেন। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :