ভাঙ্গায় স্বামীর দেওয়া পরকীয়ার মেসেজ পেয়ে স্বামীকে ভিডিও কল দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন গৃহবধূ জান্নাতি(১৪)। এমন ঘটনাটি ঘটে রবিবার রাত তিনটায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাহগঞ্জ ইউনিয়নের মাঠ গঙ্গাধরী গ্রামে।
নিহত কিশোর গৃহবধূ ওই গ্রামের সাবেক সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট রফিক ফকিরের কন্যা জান্নাতি(১৪)। সে মাঠগঙ্গাধরদি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জান্নাতির সঙ্গে একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাড়ির নুরা মাতব্বরের ছেলে শাকিল মাতুব্বর জান্নাতিকে নবম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় স্কুলে যাতায়াত পথে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। এরপর বেকার স্বামী শাকিল ইটালি যাওয়ার জন্য স্ত্রী জান্নাতি কে তার বাবার কাছ থেকে যৌতুক দাবি করেন। গত মাসে(নভেম্বরে) জান্নাতির বাবার টাকায় শাকিল ইটালিতে পাড়ি জমান। ইতালির যাওয়ার পরে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এমন মেসেজ জান্নাতির স্বামী শাকিল জান্নাতি কে মেসেজ করে দেয়। জান্নাতি মেসেজ পেয়ে স্বামীর সঙ্গে ভিডিও কলে ঝগড়া করেন এক পর্যায়ে জান্নাতি ভিডিও কল চালু রেখেই গলায় ফাঁস দেন। যখন জান্নাতির হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায় তখন শাকিল ইটালি থেকে তার ভাই রাসেলকে জানান। রাসেল রাত ২.৫০মিঃ জান্নাতীদের থাই জানালা দিয়ে জান্নাতি কে ঝুলতে দেখে তার মাকে ফোন দেন। মা সাবিনা বেগম জান্নাতির রুমে তার মেয়েকে ঝুলতে দেখে সে চিৎকার দেন। এর আগেই জান্নাতির মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় জান্নাতির মা সাবিনা বেগম জানান, আমার মেয়ের বয়স ১৪ বছর লম্পট শাকিল স্কুলে যাতায়াতের পথে ওকে উত্ত্যক্ত করতো। এক পর্যায়ে আমার মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে করে। শাকিল খুব গরিব ওরা আমাকে ইতালি যেতে ১৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে। আমরা ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে ইটালি পাঠাই। আরো কিছু দেনা থাকে শাকিলের পরিবার। সেই টাকা শোধ করতে আমার মেয়েকে দিয়ে আরো পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে।এ নিয়ে শাকিল এর ভাই রাসেল ও তার মা প্রায় মারধর করত আমার মেয়েকে। গতরাতে আমার মেয়েকে মারধর করে রাত আটটার সময় আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ওদের অত্যাচার অন্যদিকে শাকিল সাদিয়া নামের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম ঘটিত মেসেজ দেয়। যার জন্য আমার মেয়ে ওদের প্ররোচনায় এই পথ বাইছা চেয়। আমি ওদের ফাসির দাবি জানাই।
এদিকে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ এম এ জলিল জানান, এক গৃহবধূ তার বাড়িতেই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্বামীর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করে তাদের বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :