রেবেকার শরীরজুড়ে আগুনের পোড়া ঘা। প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শরীরের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে রেবেকা এখন ঢাকার বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন। যৌতুককে কেন্দ্র করে রেবেকাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করেছেন তারই স্বামী মেহেদী হাসান। তবে এঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।
রেবেকা সুলতানার পরিবারের অভিযোগ যৌতুকের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে রেবেকাকে শারিরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করছিলেন মেহেদী। এসব ঘটনায় মেহেদীর বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলাও করেছেন রেবেকা। মূলত যৌতুকের টাকা পেতে এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য সম্প্রতি রেবেকার মাকে চাপ দিচ্ছিলেন মেহেদী। কিন্তু রেবেকার মায়ে পক্ষে যৌতুকের টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। মামলাও প্রত্যাহার করতে রাজি ছিলেন না রেবেকা। একারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার রাতে রেবেকার (৩৯) শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন স্বামী মেহেদী হাসান (২৬)।
রেবেকার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে অবস্থা আশঙ্কাজনক রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার বিকেলে ঢাকার বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
রেবেকা গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজারপাড়া মহল্লার নবির সরদারের মেয়ে। স্বামী মেহেদী হাসান উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের সিধুলী গ্রামের বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বছর দুয়েক আগে মেহেদী হাসানের সাথে রেবেকার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়শই যৌতুকের জন্য পারিবারিক কলহ হতো। স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা বাড়ায় ছয় মাস আগে চাঁচকৈড়ে মায়ের বাড়িতে চলে আসেন রেবেকা। সবশেষ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে স্বামী মেহেদী হাসান রেবেকাকে তার বাড়িতে ডেকে নেন।
দগ্ধ রেবেকা সুলতানা জানান, তাদের সংসারে একটি পূত্র সন্তান রয়েছে। সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে স্বামী মেহেদী তাকে বাড়িতে ডেকে নেন। বাড়িতে গিয়ে তারা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে হাতপা বেঁধে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। তিনি স্বামীর বিচার দাবি করেন।
ঘটনার পর থেকে রেবেকার স্বামী মেহেদী হাসান গা ঢাকা দেওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন জানান, রেবেকার শরীরের আগুন দেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত। তবে থানায় কেউ অভিযোগ না করায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।
একুশে সংবাদ/জ.প.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :