ঘোষিত তফসিল মোতাবেক সোমবার প্রর্তীক বরাদ্দের পর থেকে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীগণ। জোটগতভাবে দলীয় সিদ্ধান্তের পর গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিসেস আফরুজা বারী ও জাকের পাটির প্রার্থী মোশাররফ হোসেন বুলু মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর বৈধ ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে এখন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ১০ জন প্রার্থী। এরমধ্যে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ৮ জনকে চেনেন না সুধিজনসহ সাধারণ ভোটাররা। দুইজন প্রার্থী ভোটারদের পরিচিত এবং তাদেরকে চেনেন। এদের মধ্যে বর্তমান এমপি জাতীয় পাটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাসদ মনোনিত প্রার্থী গোলাম আহসান হাবিব মাসুদ। প্রচারণা শুরু হলেও ভোটারদের মাঝে নেই কোন সারা শব্দ।
গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন- জাতীয় পাটির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ প্রার্থী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, জাসদ প্রার্থী গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ, বাংলাদেশ সংস্কৃতি মুক্তিজোট খন্দকার রবিউল ইসলাম, বিএনএফ প্রার্থী মো. ওমর ফারুক সিজার, বাংলাদেশ কল্যাণ পাটি মোছা: আইরিন আক্তার, এনপিপির মোছা. মর্জিনা বেগম, বাংলাদেশ কংগ্রেস পাটির মো. ফখরুল হাসান, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার (ঢেঁকি), জয়নাল আবেদীন (ট্রাক)।
মার্কা পাওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় জাসদ প্রার্থী গোলাম আহসান হাবিব মাসুদ মোটরসাইকেল নিয়ে শো-ডাউন করেন উপজেলা শহর, মীরগঞ্জ বাজার, তিস্তাবাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। অপরদিকে জাতীয় পাটিসহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকগণ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণার সুচনা করেন।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিসেস আফরুজা বারী সোমবার সন্ধ্যায় তার বাড়িতে নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। তিনি তার মেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুলাহ নাহিদ নিগারের (ঢেঁকি) পক্ষে নির্বাচনে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের আহবান জানান। নাম প্রকাশ না করা শর্তে আওয়ামীলীগের দুইজন নেতা জানান, তার মেয়েকে উপজেলাবাসী চেনেন না। তাছাড়া দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে তো কাজ করার কোন সুযোগ নেই। তারা বলেন নেতার চেয়ে দল বড়, দলীয় সিদ্ধানের মধ্যে থেকে কাজ করতে হবে।
উপজেলা কমিউনিষ্ট পাটির প্রবীণ নেতা অজিত কুমার রায় জানান, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে যেসব প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের মধ্যে ৮ জন প্রার্থীকে তিনি নিজে চেনেন না। ৩৫ বছরের রাজনীতির মাঠে কোন দিন তাদেরকে দেখেন নাই তিনি। তার ভাষ্য, যেমন দল, তেমন প্রার্থী।
সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার পারভীন জানান, সুন্দরগঞ্জ আসনে যে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের মধ্যে জাতীয় পাটির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং জাসদ প্রার্থী গোলাম আহসান মাসুদকে তিনি চেনেন। বাকী ৮ জন প্রার্থীর নাম এই প্রথম শোনেন।
উপজেলার শান্তিরাম গ্রামের সাধারণ ভোটার আব্দুল কাদের জানান, যেগুলো প্রার্থী ভোটে দাড়াইছে, তাদের মধ্যে এমপি শামীম এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদকে চিনি। বাকী গুলোকে চিনি না বা কোনদিন নাম শুনি নাই।
জাদস প্রার্থী গোলাম আহসান হাবিব মাসুদ বলেন, জাতীয় পাটির মধ্যে ধস নেমেছে। সে কারণে তিনি জয়ের ব্যাপারে অনেকটা আশাবাদী। যেভাবে ভোটাররা এক সময় তাকে ভোট নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিলেন, ঠিক একইভাবে এবার ভোটররা তাকে এমপি নির্বাচিত করবেন।
জাপার প্রার্থী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি বলেন, গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনটি জাতীয় পাটির ঘাটি নামে পরিচিত। উপ-নির্বাচনসহ সাতবার এই আসনে জাতীয় পাটি নির্বাচিত হয়েছে। এবারও জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। অন্যান্য প্রার্থীর ব্যাপারে তাঁর ভাষ্য নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দলের প্রার্থীরাগণ নির্বাচন করছেন, তাদেরকে ছোট করে দেখার কোন অবকাশ নেই।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার লেবু বলেন, প্রার্থীর চেয়ে দল বড়, আবার দলের চেয়ে দেশ বড়। প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী কাজ করবেন। দলীয় সিদ্ধানের বাইরে গিয়ে কাজ করার কোন সুযোগ নেতাকর্মীর নেই।
একশে সংবাদ/ম.ব.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :