দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১১ জন প্রার্থী। এই ১১ প্রার্থীর মধ্যে নৌকার মনোনিত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি গোলাম রাব্বানী। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে অংশ গ্রহণ করেন।
এই দুই প্রার্থী ছাড়া বাকি ৯ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্র মতে, প্রত্যক প্রার্থীর কাছ থেকেই ২০ হাজার টাকা করে জামানত নিয়ে রাখে নির্বাচন কমিশন। জামানতের এই টাকা ফিরে পেতে হলে কোন নির্বাচনী এলাকায় যে পরিমাণ ভোট পড়ে তার সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট প্রার্থীকে পেতে হয়। রাজশাহী-১ আসনের ১১ প্রার্থীর মধ্যে ৯জনই সাড়ে ১২ শতাংশ করে ভোট পাননি।
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ঢাকা সিনেমার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিও জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে মোট ভোট পড়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৯৩টি। জামানত ফিরে পেতে হলে প্রার্থীকে ২৭ হাজার ৪৭৫টি ভোট পেতে হতো। তবে মাহি পেয়েছেন ৯ হাজার ৯টি ভোট। ফলে তিনি জামানত ফিরে পাবেন না।
এ আসনে শুধু নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী জামানত ফেরত পাবেন। এ আসনে বেসরকারীভাবে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন ওমর ফারুক চৌধুরী।
এ আসনে মাহিয়া মাহি ছাড়াও জামানত ফিরে পাবেন না এনপিপির নুরুন্নেসা। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ২৯৬ টি।
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ মোট ভোট পেয়েছন ৩৩৫ টি। তিনিও জামানত ফিরে পাবেন না। , বিএনএফের আল সাআদ। ভোট পেয়েছেন ৬০৩টি তিনিও জামানয় হারিয়েছেন। তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু ভোট পয়েছেন ২৭৩টি। ফলে তিনিও রয়েছেন জামানত হারানোর তালিকায়। বিএনএমের মো. শামসুজ্জোহা। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ১৯১১টি। তিনিও হারাচ্ছেন জামানত। জাতীয় পার্টির মো. শামসুদ্দীন মোট ভোট পেয়েছেন ৯৩৮টি। তিনিও জামানত হারাচ্ছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়াও হারাচ্ছেন জামানত। তিনি ভোট পেয়েছেন ২৭১৮। ফারুক চৌধুরীর মূলপ্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী কাচি প্রতীকের গোলাম রাব্বানীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আখতারুজ্জামান। তবে প্রতীক থেকে যাওয়ায় ভোট পেয়েছেন ২০২ ভোট। ফলে তিনিও জামানত হারিয়েছেন।
জামানত হারানোর মধ্যে ভোটের মাঠে সবচেয়ে সরব ছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তিনিও বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করায় সব সময় তিনি আলোচনায় থাকতেন। জাতীয় পার্টি, এনপিপি, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতি মুক্তিজোট, বিএনএফ প্রার্থীদের ভোটের মাঠে তেমন সরব থাকতে দেখা যায়নি।
তবে বিএনএমের প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবুকে নির্বাচনী প্রচারণায় সরব থাকতে দেখা যায়। তার প্রচারণায় সমালোচনাও মুখে পড়ে। সে নিজেকে বিএনপির প্রয়াত এমপি ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের নিকট আত্নীয় বলে প্রচার করে। আমার কখনো জামায়াতের প্রার্থী হয়ে প্রচার চালায়। যদিও জামায়াত নির্বাচনে না আসলেও স্বতন্ত্র হিসেবে জামায়াত থেকেই নির্বাচন করছেন বলে প্রচার হয়। ভোটের শুরুতে শামসুজ্জোহা বাবু প্রচার চালায় বিএনএম নতুন দল শেখ হাসিনারই সৃষ্টি। তিনি গণভবনে মাথায় আর্শিরবাদ দিয়ে ভোট করতে বলেন । যার কারণে তিনি ভোট করছেন। আবার কখনো শোনা যায়, আওয়ামী লীগ কিছু জায়গায় আসন ছাড়া দিবে তার মধ্যে রাজশাহী-১ আসনটি রয়েছে। ফলে সে এমপি নির্বাচিত হয়েই গেছেন বলে প্রচার করতে থাকে। এছাড়াও তার পক্ষ থেকে ঢাকা থেকে ১২-১৫ জন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এলাকায় এসে সব দেখছেন । ভোটের মাঠে শুধু আমাকে থাকতে বলেছেন এমপি নির্বাচিত করা দায়িত্ব তাদের বলেই সে বিভিন্ন জনের কাছে নিজেকে জাহির করনে। এছাড়াও এই দল থেকে নির্বাচন করলে কোটি টাকা পাবেন মূলত এই কারনে নির্বাচনের মাঠে আছেন। টাকা গুলো পেলে নামমাত্র কিছু খরচ করে বাকি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স করে রাখবেন বলেও তিনি বিভিন্ন জনের মাঝে প্রচার করেন।
এছাড়াও ভোটের মাঠে সরব ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া।
রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ‘জামানত ফেরত পেতে হলে মোট প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট প্রার্থীকে পেতে হয়। রাজশাহীতে যারা এই পরিমাণ ভোট পাননি, তাদের জামানত নির্বাচন কমিশন বাজেয়াপ্ত করবে। অন্যরা ফেরত পাবেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :