AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ভূয়া কাবিননামা বানিয়ে আদালতে নারীর মিথ্যা মামলা


Ekushey Sangbad
নগরকান্দা উপজেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর
১১:২০ এএম, ১০ জানুয়ারি, ২০২৪
ভূয়া কাবিননামা বানিয়ে আদালতে নারীর মিথ্যা মামলা

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চরযশোরদী ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের আনোয়ার মুন্সীর বিবাহিত বড় মেয়ে শাহারা আক্তার ওরফে স্বপ্না (৩৫) ভূয়া কাবিননামা বানিয়ে তার ফুপাতো ভাই নগরকান্দা উপজেলার লস্কারদিয়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মৌলবী মনিরুল ইসলাম হেমায়েত এর যোগসাজশে উপজেলার লস্কারদিয়া ইউনিয়নের জুঙ্গুরদী গ্রামের মুত শামচুল হক তারা মাতুব্বর এর ছেলে আসামী ১। মোঃ আবুল হাসান (৪৫) ও তার স্ত্রী ২। মোসাঃ সাবানা বেগম(৩৫) এবং একই গ্রামের ৩। আঃ সোবহান মোল্লা (৬৫) কে আসামী করে ১৫/১২/২০২৩ ইং ঘটনা দেখিয়ে ১৯/১২/২০২৩ ইং তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৪ নং আমলী আদালত, ফরিদপুর। ২০১৮ সনের যৌতুক নিরোধ আইনে ৩ ধারায় মামলা করেন।মামলা নং নগরকান্দা সি আর -৩২০/২৩।

মামলায় বাদীর পিতা,১।আনোয়ার মুন্সি (৬০)২।মাতা,খাদিজা বেগম(৫৫) ৩। বোন রুপালী আক্তার (৩০)৪। আত্বিয় বুরহান (৩০) কে মানিত স্বাক্ষী করে।

মামলার অভিযোগে জানা যায় ১ নং আসামী মোঃ আবুল হাসান বাদীর স্বামী, ২ নং আসামী মোসাঃ সাবানা বেগম ১ নং আসামীর স্ত্রী তার সতিন,৩ নং আসামী আঃ সোবহান মিয়া তার চাচা শশুর হইতেছে।বাদীর স্বামীকে তালাক দিয়ে ১ নং আসামী আবুল হাসান এর সহিত গত ০১/০১/২০২৩ ইং তারিখে এভিডেভিড ও ইসলামী শরাশরিয়ত মোতাবেক রেজিষ্ট্রি কাবিনমূলে বিবাহ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া যৌতুক চেয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ করার কথা উল্লেখ করেন।এবিষয় নিয়ে একাধিকবার বাদীর বাড়িতে সালিশ বৈঠক হয়েছে বলে মামলার অভিযোগে লেখা স্পষ্ট।

মামলার নথি সংযুক্ত নিকাহনামা ফটোকপিতে দেখা যায় ১ নং আসামী মোঃ আবুল হাসান এর সহিত এই মামলার বাদী শাহারা আক্তার ওরফে স্বপ্নার ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ২ লাখ টাকা ওয়াসিল নগদ পরিশোধ দেখানো হয়েছে। বিবাহের রেজিষ্টির তারিখ দেখানো হয়েছে গত-০১/০১/২০২৩ ইং। বিবাহ রেজিস্ট্রার স্থান দেখান হয়েছে উপজেলার লস্কারদিয়া ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার অফিসে।নিকাহ রেজিস্ট্রার আবুল হাসান ৯ নং লস্কারদিয়া ইউ,সীল,নগরকান্দা, ফরিদপুর এর সীল ও স্বহস্তে স্বাক্ষর দেখা যায়। কাবিন নামায় বরের উকিল ওমর আলী মোল্লা, পিতা- মোঃ আয়নাল মোল্লা গ্রাম - লস্কারদিয়া থানা নগরকান্দা ও কন্যার উকিল তুহিন ওরফে রাজ্জাক পিং- বাদশা মিয়া সাং-  পোঃ ফুলবাড়িয়া থানা- সালথা।  

মামলায় বাদীর সংযুক্ত কাবিননামায় বিবাহ রেজিষ্টির স্থান  লস্কারদিয়া ইউনিয়ন দেখানো হয়েছে ও রেজিস্ট্রারের নাম হাসান এর সীল ও স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে সেই লস্কারদিয়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার হচ্ছেন এই মামলার বাদী শাহারা আক্তার ওরফে স্বপ্নার আপন ফুপাতো ভাই কাজী মৌলবী মনিরুল ইসলাম হেমায়েত। লস্কারদিয়া ইউনিয়নে আবুল হাসান নামে কোন নিকাহ রেজিস্ট্রার নেই।

বাদীর করা যৌতুকের মামলা আদালত থেকে আসামীগন কোন নোটিশ হাতে পাইনি এরই মধ্যে ১০ দিন পর গত ২৫/১২/২০২৩ ইং তারিখে  উক্ত মামলার বাদী শাহারা আক্তার ওরফে স্বপ্না নতুন ঘটনা সাজিয়ে এক সাংবাদিকের নাম সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ও  আসামীদের মধ্যে ২ জনের নামে পুনরায় বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ফরিদপুর মোকদ্দমাঃ ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১০৭/১১৭(সি) ধারায় মামলা করেন। নগরকান্দা পিটিশন নং ৪৭৪/২০২৩। এই মামলার বাদীর অভিযোগে জানা যায় আসামীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি - জমা নিয়ে শত্রুতা ও মামলা - মোকদ্দমা চলিয়া আসিতেছে। যৌতুক আইনে মামলা করি।মামলা করার পর আসামীগন বাদীর বাবার বাড়ির সামনে  উপজেলার চরযশোরদী ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে খুন করার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সুরকি,রামদা,ভল্লম,লোহার সাবল,বাঁশের লাঠি,কাতরা নিয়ে জোড় হয়ে গালিগালাজ করে হুমকি প্রদান করায় মামলা করেন।

মামলায় অভিযুক্ত ১ নং আসামী মোঃ আবুল হাসান বলেন, আমি একজন মাদ্রাসার শিক্ষক,আমার প্রতিবেশী বাদীর আপন ফুপাতো ভাই কাজী মনিরুল ইসলাম পিতা- মৃত- খলিলুর রহমান মোল্লা গ্রাম - জুঙ্গুরদী থানা- নগরকান্দা, জেলা ফরিদপুর এর সহিদ টাকাপয়সা লেনদেন করা নিয়ে আদালতে মামলা করি এবং মামলায় আদালত থেকে আমার পক্ষে রায় প্রদান করে।এছাড়া  মনিরুল ইসলাম ৩ টি মিথ্যা মামলা করলেও সেই মামলা থেকে খালাস পাই।

প্রায় ৪ মাস পুর্বে এই মামলার বাদী শাহারা আক্তার ওরফে স্বপ্না তার মা‍‍`কে সাথে নিয়ে  হঠাৎ করে আমার বাড়িতে আসে। বাড়ির কাজ সেরে এগিয়ে তাকে আমার বাড়িতে আসার কারন জানতে চাইলে সে বলেন আমাকে একটু সাহয্য সহযোগীতা করতে হবে আপনারাতো গ্রামের মাতুব্বর তানা হলে আপনাদের বিশাল ক্ষতি হবে।কিসের বিপধ ক্ষতি  হবে সে বলে আমাকে দিয়ে ভিকটিম বানিয়ে আপনার নামে যে কোন মামলা করবে কাজী মৌলবী হেমায়েত।

বিষয়টি খোলাসা ভাবে জানতে চাইলে সে বলে আপনাদের বাড়ির পাশে আমার ফুপাতো ভাই লস্কারদিয়া ইউনিয়নের কাজী মৌলবী মনিরুল ইসলাম হেমায়েত এর কাছে ১ লাখ টাকা পাই।কিসের টাকা পাবেন জানতে চাইলে সে বলে আমার পূর্বের স্বামী ডিভোর্স দেওয়ার টাকা তার কাছে রেখে গেছিলাম ঢাকায়। সেই টাকা আজ কাল করে গোরাইতেছে দিচ্ছেনা।আপনারা মাতুব্বর হিসাবে গ্রামের লোকজন নিয়ে আমার টাকা উঠিয়ে দিবেন।আমরা তাকে বল্লাম থানায় গিয়ে বা আদালতে গিয়ে মামলা করেন।সে বলে আদালতে মামলা করলেতো স্বাক্ষী লাগবে  তাহলে আপনারা আমার পক্ষে  স্বাক্ষী দেন।

টাকা দেওয়া নেওয়ার বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা কোর্টে কি স্বাক্ষী দিব।আমাদের কাছে সুবিধা না পেয়ে বাড়িতে চলে যায়। প্রায় ৪ মাস পর ৫ জানুয়ারী ২০২৪ রোজ শুক্রবার ১০৭/১১৭(সি) ধারা মামলার নোটিশ কোর্ট থেকে  নোটিশকারী বাড়িতে দিয়ে যায়। মামলার কাগজ হাতে পেয়ে পড়ে জানতে পারি বাদী এর আগেই যৌতুক আইনে মামলা করেছে। পরে আদালত থেকে মামলার নথি উঠিয়ে দেখতে পাই আমার ফেসবুক থেকে ছবি নিয়ে বাদী শাহারা আক্তার স্বপ্নার ছবি পাশাপাশি লাগিয়ে নোটারীর পাবলিক এফিডেভিড করে এবং স্হানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার দিয়ে  একই তারিখে বিবাহ রেজিষ্টি করা হয়েছে।১ শ টাকার দুটি স্ট্যাম্পে যাহার নাম্বার ০৮৮০৩৮,০৮৮০৩০৭। যাহার রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ০৪ তারিখ ০১/০১/২০২৪ ইং। এ্যাডভোকেট মোঃ মকলেছুর রহমান ফরিদপুর জজকোর্ট এর কলাকৌশলে আমার অনুপস্থিতিতে নোটারী পাবলিক সম্পন্ন করে।বাদী আমাকে সহ আমার পরিবারের লোকজনের নামে মনগড়া  মিথ্যা মামলা করায় আমিসহ আমার পরিবারের মান সম্মান ক্ষুন্ন করেছে। আসামীদের বাড়ি ও বাদীর বাড়ির দুরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। জমিজমা নিয়েও কোন বিরোধ নেই কোন মামলা মোকদ্দমা বাদীর পরিবারের সাথে নেই।

বিবাহের হলফনামায় মানিত স্বাক্ষী ওমর আলী পিতা- আয়নাল গ্রাম- লস্কারদিয়া ইউনিয়ন লস্কারদিয়া থানা - নগরকান্দা তার কাছে  এই এফিডেবিট করা ও স্বাক্ষী দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে সে বলেন আমার সেদিন আদালতে মামলার তারিখ দিন ছিল এবং আমার উকিল ছিলেন এ্যাডভোকেট মোঃ মোকলেছুর  রহমান।সেদিন আমার মামলার বিষয় কয়েকটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছে কিন্তু এই এফিডেবিট করার বিষয় আমি কিছুই জানিনা। অপর তিনজন স্বাক্ষীর পরিচয় গোপন রাখায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। বাদীর করা নগরকান্দা - সি আর -৩২০/২০২৩ মামলার ১,২,৩ নং স্বাক্ষী বাদীর বাবা,মা,বোন। ৪ নং স্বাক্ষী বুরহান(৩০) পিং- বাকা মেম্বার সাং- দহিশারা থানা- নগরকান্দা জেলা - ফরিদপুর এর নিকট এই মামলার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন এই মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা আমি কোন স্বাক্ষর দেইনি।সে আরও জানান বাদী খুবই ডেঞ্জারাস মহিলা বিয়েও করেছে ২/৩ টি। বাদীর এলাকার লোকজন অনেকেই বাদীর নাম শুনেই বলেন চিটিংবাজ মহিলা।জালজালিয়াতি করা মানুষের নামে মিথ্যা মামলা করাই তার কাজ যে কারনে তার আপনজন প্রতিবেশীরা ভালো চোখে দেখতে পারেনা।মামলার করার বিষয়ে বাদী শাহারা আক্তার ওরফে স্বপ্নার মোবাইল ০১৩৩১৫৯৪৩৭০ নাম্বারে ফোন দিলে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। নোটারীর পাবলিক বিবাহের হলফনামা করার বিষয়ে এ্যাডভোকেট মোকলেছুর রহমান এর মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে এই মামলার আসামীগন আদালতে ন্যায় বিচার পেতে বিচারকের সদয় কামনা সহ জালিয়াতি চক্রদের আইনের শিখল বন্দী করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

 

একুশে সংবাদ/এস কে 

Link copied!