জয়পুরহাট জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। বর্তমান জেলার মাঠের দিগন্তজুড়ে শোভা পাচ্ছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য হলুদ সরিষা ফুল। হলুদের সমারোহ আর সরিষা ফুলের মনমাতানো গন্ধ আকৃষ্ট করছে সবাইকে। গত কয়েক বছর সরিষা চাষ করে বেশ লাভবান হওয়ায় এবারও জয়পুরহাটে ব্যাপক এই ফসল চাষ করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জয়পুরহাট জেলা মূলত আলু ও ধান চাষে বিখ্যাত। তবে এবার আলুর পাশাপাশি সরিষা বুনেছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার পূরানাপৈল, দস্তপুর, হালট্টি, জলাটুল, হেলকুন্ডা, আক্কেলপুর উপজেলার কানুপর, মাতাপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক সরিষার চাষ করেছেন কৃষকরা। বিস্তীর্ণ মাঠ ছেয়ে গেছে হলুদ ফুলে। ইতিমধ্যে কিছু জমির গাছে গাছে সরিষার দানা আসতে শুরু করেছে। কৃষকরা জমিতে সার, কীটনাশক দেয়ার ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সদর উপজেলার দস্তপুর গ্রামের কৃষক লাজির উদ্দীন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এক বিঘা সরিষা চাষ করতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিঘাতে ফলনও হয় ৭ থেকে ৮মণ। ২ হাজার টাকা মণ বিক্রি হলে ৭ হাজার টাকার মতো লাভ হয় বিঘাপ্রতি।
পুরানাপৈল শালগ্রামের জামিরুল ইসলাম বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, গত কয়েক বছর সরিষার ভাল দাম ছিল। তাই এবারও এই এলাকায় পুরো মাঠ জুড়ে শুধু সরিষার চাষ হয়েছে। আমি এবার ১৩ বিঘাতে চাষ করেছি। গত বছরের মতো এবারও যদি ভাল ফলন ও বাজারে ভাল দাম পাই তাহলে লাভবান হতে পারবো।
হালট্টি গ্রামের রানা হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, গত বছর এক বিঘা জমিতে খরচ হয়েছিল ৬ হাজার টাকা। কিন্তু এবার সার-কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
আক্কেলপুরের মাতাপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, তেলের দাম বেশির জন্য এবার ২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এর মধ্যে এক বিঘা জমির সরিষা বিক্রি কররো। আর বাকি সরিষা তেল করবো বাড়িতে খাওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার এনামুল হক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, জয়পুরহাট জেলা সরিষা চাষের জন্য অত্যন্ত অগ্রগামী। সাধারণ মানুষের মাঝে সরিষার তেল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। পাশাপাশি বাজারেও এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এজন্য কৃষকরা এই চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় সরিষার চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে। গত বছর হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। যা প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বেশি। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার বীজসহ অন্যান্য উপকরণ সহযোগিতা করেছি। কিছু প্রণোদনাও দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :