ঢাকার সাভারে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। দুই প্রার্থীই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।
বুধবার রাত ৯ টার দিকে পৌরসভার কাতলাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, সাগর, পান্না, সাব্বির, জাহিদ, হৃদয়, লাদেন, সম্পদ। এরমধ্যে সাগর ও সম্পদের মাথা ফেটে যাওয়ায় সেলাই দেয়া হয়েছে। এছাড়া পান্নার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাত ৮ টার দিকে কাতলাপুরে সাভার পৌর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও নির্বাচনের সময় ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং ওরফে মুরাদের সাভার পৌরসভার ৭৩ টি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আবদুল হালিমের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে উভয় আবদুল হালিমসহ বেশ কয়েকজন বসে ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটিতে ওই এলাকার নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে পূর্বের একটি মারধরের ঘটনার সমাধানের বিষয়ে উভয় পক্ষের আলোচনার জন্য নৌকার সমর্থকদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। পরে নৌকার ১৫-২০ জন সমর্থক সেখানে পৌঁছালে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা জানান, রাত ৯ টার দিকে নির্বাচনের সময় নৌকার সমর্থক রকি, টিপু, বাবু, পলাশসহ ২০-৩০ জন আবদুল হালিমের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন। প্রথমে তাঁরা প্রতিষ্ঠানের এক পাশে বসে থাকা আবদুল হালিমের ছেলে রবিউল আওয়াল হৃদয়ের সঙ্গে তর্কে জরিয়ে পরেন। পরে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর করেন। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। একজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নৌকার সমর্থক সাভার পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বলেন, ভোটের ফলাফলে ঈগলের প্রার্থী আমাদের কেন্দ্রে কিছু ভোট বেশি পায়। পরে তাঁরা নৌকার সমর্থকদের মারধর করে। ওই ঘটনায় রাতে মিমাংসা জন্য বসার কথা ছিলো আমরা ৮-১০ জন হালিম সাহেবের ওইখানে গেলে তাঁর ছেলে আইসা আমাদের মারধর করে।
গতকাল রাতে সাভার পৌর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও নির্বাচনের সময় ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং ওরফে মুরাদের সাভার পৌরসভার ৭৩ টি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আবদুল হালিম বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানটিতে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে পূর্বের একটি ঘটনার মিমাংসার কথা ছিলো। কিন্তু তাঁরা (নৌকার সমর্থক) ২০-২৫ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে উপস্থিত হয়। এসময় প্রতিষ্ঠানের একপাশে বসে আমার ছেলে এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলছিলো এসময় তাঁরা আমার ছেলের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে মারধর করে।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, উভয় পক্ষই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে আবদুল হালিমকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া উভয় পক্ষের আরো বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :