রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কুকুরের কামড়ে একের পর এক গরু-ছাগল মারা যাচ্ছে। ৩ মাসে বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণে শতাধিক গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে বলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানিয়েছে।
এ সময়ে কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে দুই শতাধিক গবাদিপশু, যার ৫০টি চলতি মাসে আহত। কিন্তু প্রতিরক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। দিশেহারা হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা বলছেন, নিম্ন আয়ের প্রায় সব পরিবারই গরু-ছাগল পালন করে। বাড়ির নারীরাও সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে গবাদিপশু পালন করে থাকে। ফাঁকা মাঠে-ময়দানে গরু-ছাগল ছেড়ে দিয়ে ঘাস খাওয়ানো হয়। অনেক মাঠে গরু-ছাগল চড়ানোর সময় কেউ উপস্থিত থাকে না। এই সুযোগে এসব ছাগল-গরুকে আক্রমণ করছে বেওয়ারিশ কুকুর। এসব কুকুর এখনই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে গবাদিপশু পালনে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের মেডিকেলপাড়া এলাকার মেহেরুনেছা গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি ছাগলকে নিয়ে এসেছেন। কয়েক দিন আগে তাঁর ছাগলটি ১৫-২০টি কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়। তাই তিনি হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ছাগলটি এখন সুস্থ। এ সময় মেহেরুন্নেছা ‘হামরা গরিব মানুষ, এই রকম করি যদি ছাগল-গরুগুলো কুকুরে কামরায়, তা হইলে কেমন কী হামরা ছাগল-গরু পোষমো!’
কথা হয় একই এলাকার নুরী বেগমের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আসা হামার তিনটা ছাগল খায়া ফেলাইছে ১০-১২টা কুকুর। এই কুকুরগুলা এলাকাত হাঁস-মুরগি-ছাগল কিছুই থোয়চোল না। এইগুলার জ্বালায় কেমন করি একনা জিনিস পোষমো। কিছুদিন আগে পাশের বাড়ির কাদেরের প্রায় ২০ হাজার টাকার ৫টা ছাগল খায়া ফেলাইছে। সরকার কি এইগুলার ব্যবস্থা না নেয়?’
কোলকোন্দ ইউনিয়ন থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে আসা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সকাল বেলা বাড়ির উঠানে ঘাস খাচ্ছিল ছাগলটি। কোথা থেকে যেন চার-পাঁচটা কুকুর এসে ছাগলটার গলায় কামড়ে ধরছে। এইভাবে কি আক্রমণ করলে ছাগল পোষা যায়? কয়েক দিন আগে হামার এলাকাত আরও কয়েকজনের ছাগল মারি ফেলাইছে।’
তিন মাসে বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণে শতাধিক গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাখাওয়াৎ `প্রতিদিন যে হারে কুকুর কামড়ানো ছাগল চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে, তাতে আমরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় কথা বলব। আশা করছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানে দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে।
এই বিষয় অভিজ্ঞ মহল মনে করেন যে উচ্চ আদালতের ১৯২০ সনে ৭ ধারায় প্রাণী হত্যা জেল জরিমানা আইনগত জটিলতা থাকার কারণে সমগ্র দেশে কুকুর হত্যা নিষিদ্ধ থাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা দিন দিন বেপক হাড়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় সমগ্র বাংলাদেশে শহর বন্দর সহ প্রতিটি অঞ্চলে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে সেই ক্ষেত্রে সরকারী ভাবে প্রতিটি অঞ্চলে এই বেওয়ারিশ কুকুর গুলি তদারকি করা অতি জরুরি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :