উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দুই সপ্তাহে উপজেলায় শিশু ডায়রিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে জ্বর, সর্দি ও কাশি। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে ভূরুঙ্গামারী সদর হাসপাতালে শীতজনিতসহ শিশু ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় উপজেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বর্হিবিভাগ চিকিৎসা নিতে অনেক লোক ভীড় করছে। এদের অনেকেই ঠান্ডাজনিত সর্দি, জ্বর, কাশিতে আক্রান্ত। বয়স্কদের অনেকেই শ্বাসকষ্ট, শিশুরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এসেছেন। অপরদিকে হাল্কা রোদে হাসপাতালের ছাদে ভর্তিকৃত শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মোঃ রাজু মিয়া জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে শিশু ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি ) হাসপাতালে ২৩ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ২১ জন শিশু। শনিবার (২০ জানুয়ারি ) সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৬ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের কলা ও চিড়া খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই শীতে বাচ্চাদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এই সময়টাতে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। শীত বেশি পড়লে শিশুকে গরম কাপড় পরাতে হবে। শিশুদের খুব বেশি সময় ঘরের বাইরে রাখা যাবে না। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের ছফর উদ্দিন বলেন, তার দেড় বছরের বাচ্চা বায়েজিদের হঠাৎ করে গত দুদিন থেকে জ্বর ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। অবশেষে হাসপাতালে আসছি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। হাসপাতাল থেকে স্যালাইন সর্বরাহ করা হয়েছে।
চর বলদিয়া থেকে এসেছেন মজিবর রহমান তিনি জানান, তার ৪ বছরের ছেলে স্বাধীন ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সরকারি স্যালাইন পেয়েছি। তবে স্যালাইন সেট বাহির থেকে কিনতে হয়েছে।
গোপালপুর গ্রাম থেকে আসা খোকন মিয়া নামের অপর একজন জানান তার আড়াই বছরের সন্তান ইব্রাহিম পাতলা পায়খানা ও বমি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কোন বেড ফাঁকা না থাকায় ছাদে চিকিৎসা নিচ্ছি।
আব্দুল বাতেন (৬০) নামের এক বয়স্ক লোক জানান, শীতে তার শ্বাসকষ্ট ও এ্যাজমার সমস্যা বেড়েছে তাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছি।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, শীতজনিত রোগের প্রকোপ একটু বেড়েছে। অন্যান্য রোগীর তুলনায় শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। স্যালাইন যাতে নষ্ট না হয় তাই সর্বরাহের ক্ষেত্রে একটু কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। শিশুদের প্রথমে ১০০ ও পরে ২০০ এমএল স্যালাইন সর্বরাহ করা হচ্ছে।হাসপাতালে ঔষধ ও স্যালাইনের কোন সংকট নেই।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :