রাজশাহীর তানোরে আলুর গাছে পচন রোগ দিশেহারা হয়ে পড়েছে আলু চাষীরা। পচন রোগ দূর করতে মাঠে পাচ্ছেন না কৃষি অফিসের কোন লোকজনকে। রোগ দূর করতে বালাইনাশকের দোকানীর পরামর্শে একের পর এক কীটনাশক ব্যবহার করেও দূর করতে পারছেন না রোগ। এতে করে চরম হতাশ হয়ে পড়েছে তানোরের আলু চাষীরা। ফলে চরমভাবে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা চাষীদের মধ্যে।
জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার আমান হিমাগারের পশ্চিমে, সরনজাই ইউপির সিধাইড়,যশপুর, নারায়নপুর মাঠে বিস্তীর্ণ আলু খেতে দেখা দিয়েছে এ পচন রোগের। এছাড়াও যোগীশো মাঠেও প্রচুর পরিমানে ছড়িয়ে পড়েছে পচন রোগের মহামারী। ওই মাঠে ৩০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন কৃষক রফিকুল ইসলাম, ৬ বিঘা জমিতে আক্কাছ, প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছেন কৃষক শরিফুল। তারা বলেন, তাদের মাঠে প্রায় দুইশ’ বিঘা জমির আলুগাছে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। রোগে আলুগাছ মরে যাচ্ছে। এতে ফলনহানির আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। অথচ কৃষি বিভাগ নির্বিকার রয়েছে। কৃষকদের সচেতন করতে তাদের দৃশ্যমান তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আবার অনুমান নির্ভর হয়ে কৃষকরা বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও গাছ রক্ষা করতে পারছে না।
বুধবার সরেজমিনে উপজেলার তালন্দ ইউপির মাঠে আলুখেতে দেখা গেছে, অধিকাংশ আলুর গাছে পচন রোগে আক্রান্ত হয়ে আলুগাছ পচে (মরে) যাচ্ছে। কৃষকরা অনুমান নির্ভর হয়ে উচ্চ দামে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করে আলুগাছ রক্ষা করতে পারছে না। যার কারনে চাষীদের পকেট হচ্ছে খালি, অপর দিকে পকেট ভরছে দোকানীদের। ওই মাঠের আলু চাষি নারায়নপুর গ্রামের কৃষক মইফুল বলেন, এবার তিনি ১শ বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছেন। পচন রোগে ইতিমধ্যে তার আলুখেতের সিংহভাগ গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই মাঠের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, পচন রোগে আক্রান্ত তার আলুখেতে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেছেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের (উপসহকারী কর্মকর্তা) মাঠকর্মীদের কোন নাগাল পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে তারা বাধ্য হয়ে অনুমান নির্ভর কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে কীটনাশক ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও কপাল পুড়ছে কৃষকের।
চলতি মৌসুমে যে সকল চাষীরা জমি ইজারা নিয়ে আলুচাষ করেছেন তাদের প্রতি বিঘায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও নিজস্ব জমিতে প্রতি বিঘায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলমি মৌসুমে প্রায় ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৬০ হেক্টর জমিতে কম আলু চাষ হয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, তার জানা মতে কোথাও আলুগাছে পচন রোগ ধরেনি, আলুর গাছ ভালো অবস্থায় আছে, আলুগাছে পচন রোগ দেখা দিলে কৃষকরা যদি তাদের কাছে পরামর্শ নিতে না আসেন তাহলে তো তাদের করণীয় কিছু নাই। তিনি বলেন, তার জানা মতে এখনো তানোরের কোথাও আলুগাছে পচন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো খবর তার কাছে নাই।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :