কাল রাজপথে শোডাউনের পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের

বিএনপি কালো পতাকা মিছিলের বিপরীতে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটি কোনোভাবেই বিএনপিকে মাঠ ছেড়ে দিতে রাজি নয়। তাই দলটি শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাজপথে বড় শোডাউন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।

বিএনপি গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন কোনো সহিংসতা নেই যা করেনি। তারা বাসে, ট্রেনে আগুন দিয়েছে। ট্রেনের লাইন কেটে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। পুলিশ পিটিয়ে মেরেছে। তাই তাদের মাঠ ছেড়ে দিয়ে আবারও সহিংসতা করতে পারে। কারণ তারা নির্বাচনে না এসে বানচাল করতে চেয়েছিল। এখন আবার সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। শুধু গুজব ছড়ানোয় তারা বসে নেই। তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে না ধরণের ষড়ন্ত্র করছে। ফলে তাদের আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আর তারা যদি আন্দোলনের নামে কোনো ধরণের সহিংসতার পথ বেছে নেয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও বসে থাকবে না। তারা আইনি ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে রাজনৈতিকভাবে কঠোর জবাব দেবে। এরই অংশ হিসাবে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের দিন রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের সামনে বিকাল ৩টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সমাবেশ সফল করতে গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশ সফল করতে দক্ষিণের অন্তর্গত সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দলীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও কর্মী-সমর্থকদের নির্দেশনা দিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে রাজধানীর প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে এবং পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলেন, কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি অতীতের মতোই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করতে পারে। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সামনের দিনগুলোতেও রাজপথে সজাগ ও সতর্ক থাকবে। তাই শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। যদিও বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় আওয়ামী লীগ। তারা যেমন রাজনীতির মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগও কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে বড় জমায়েত করবে আওয়ামী লীগ। বিএনপি ভুল রাজনীতি ও অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়ে যে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করেছে, সেজন্য তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন তা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে আবারও মাঠে নামছে তারা। আমরাও রাজপথে থাকবো, যাতে তারা কালোপতাকা মিছিলের নামে কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড না করতে পারে। এছাড়া রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ সময়ের আলোকে বলেন, বিএনপির সঙ্গে এখন আর জনগণ নেই। তারা জনবিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল। তাই বলে তো আমরা মাঠ ছেড়ে দিতে পারি না। কারণ তারা যে কোনো সময় আবার সহিংসতা করতে পারে। তাই আওয়ামী লীগও কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। আওয়ামী লীগ শান্তি ও গণতন্ত্র সমামাবেশ করবে। শনিবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে। এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সময়ের আলোকে বলেন, বিএনপির ভুল রাজনীতির কারণে তারা আজ জনবিচ্ছিন্ন। নিজেদের নেতাকর্মীরা এখন রাজনীতির মাঠে নেই। এজন্য তারা আবারও মাঠের রাজনীতিতে সরব হতে কর্মসূচি দিয়েছে। তবে তারা কর্মসূচির নামে কোনো সহিংসতা করলে আমরাও রাজপথে তাদের জবাব দেবো। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তারা আইনি ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি আজ শনিবার আলাদা কর্মসূচি না থাকলেও প্রতিটি থানা-ওয়ার্ডে সতর্ক থাকবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী সময়ের আলোকে বলেন, বিএনপি কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচির নামে যাতে দেশে কোনো অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে, তাই আমরাও মাঠে সতর্ক অবস্থানে থাকবো। যদিও বিএনপির এই কর্মসূচির সঙ্গে দেশের জনগণ নেই। এই কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি যদি কোনো ধরণের সহিংসতা করে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবিলা করব।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান সময়ের আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বিএনপি যাতে কালো পতাকা মিছিলের নামে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, তার জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাড়া, মহল্লায় পাহারায় থাকবে। বিগত দিনেও সজাগ ও সতর্ক ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকব।

একুশে সংবাদ/বিএইচ