রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ইউপির নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন প্রবেশ পত্র প্রতি ২০০ টাকা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ার টাকা দিতে না পারায় তাকে দেয়া হয়নি এডমিড কার্ড। এমনকি বিদায় অনুষ্ঠানের নামেও শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা আদায় করেছেন শিক্ষক আলাউদ্দিন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। বিদায় অনুষ্ঠানের নামে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে আদায় করেছেন ২৫০ টাকা করে চাঁদা। ফলে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের বেপরোয়া শিক্ষা বানিজ্যের কারনে ফুঁসে উঠেছে এসএসসি পরিক্ষার্থীসহ অভিভাবক মহল। তিনি শিক্ষক না তিনি একজন চাঁদাবাজ বলেও স্হানীয়দের দাবি।
জানা গেছে, পরিক্ষার ফরম পুরনের জন্য মানবিক বিভাগের ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৩ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন এই শিক্ষক। এদিকে ফরম পুরনের জন্য অতিরিক্ত টাকা নিলেও শিক্ষক আলাউদ্দিন প্রবেশ পত্র ও বিদায় অনুষ্ঠানের নামেও করেছেন ব্যাপক চাঁদাবাজি।
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অনেকে ফরম পুরনের সময় টাকা কম দেয় এজন্য এডমিড কার্ড দেওয়ার সময় ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। বিদায় অনুষ্ঠানের নামে ২৫০ টাকা করে এবং প্রবেশ পত্রের জন্য ২০০ টাকা এভাবে নিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য এটা কেন আরো টাকা আদায় করার নিয়ম আছে। আমি বানিজ্য করিনি আমার সম্পদ কি কম আছে, আর বিদায় অনুষ্ঠান করতে টাকা খরচ হবে কে দিবে এজন্য চাঁদা নেওয়া হয়েছে। স্কুল হওয়ার পর থেকেই এভাবেই চলছে চলবে বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন এই শিক্ষক। বেশকিছু শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব গ্রামীণ এলাকা অনেক দরিদ্র ছাত্র আছে। কিন্তু কাউকে ছাড় দেয়নি। এমনকি ৫/৭ দিন ঘুরে অনেকে ১০০/১৫০ টাকা দিতে চাইলেও এডমিড কার্ড ভাগ্যে জুটেনি। ২০০ টাকা ছাড়া দেয়নি। তিনি প্রধান শিক্ষক নামের কসাই বললেও ভুল হবে না। তার সাব কথা ২০০ টাকা দাও এডমিড নাও, পরিক্ষা দেওয়া হলেও ভালো নাহলেও ভালো, টাকা দিতেই হবে।
এডমিড কার্ড না পাওয়া এসএসসি পরীক্ষার্থী তুষারের পিতা এরাদ মন্ডল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষা নিয়ে কেন এত বানিজ্য। সরকার তাদেরকে তো বেতন ভাতা কম দিচ্ছে না। আমার সন্তান স্কুলে প্রাইভেট না পড়েও তাকে ৯০০টাকার জন্য কয়েকদিন ঘুরেও মিলেনি এডমিড কার্ড। বাধ্য হয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও কে ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে অভিযোগ দিয়েছি। এ কেমন শিক্ষক যে আমাদের মত দরিদ্র ব্যক্তিদের পকেট কাটছে। এসব শিক্ষক দের শাস্তি হওয়া দরকার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে তাকেও ফোনে পাওয়া যায়নি। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এডমিড কার্ডের জন্য টাকা নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। যদি নিয়ে থাকে তাহলে কঠোর ব্যবস্হা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :