জ্বালানি সংকটের কারণ দেখিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহন করা হচ্ছে না। সরকারি এ্যাম্বুলেন্স তালাবদ্ধ। ফলে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহনে অর্থের সঙ্গে বেড়েছে ভোগান্তিও। প্রায় ৮ মাস ধরে থেমে থেমে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে এমন অবস্থা। তবে এবার নোটিশ আকারে গত ০৫ ফেব্রুয়ারি থেকে জানিয়ে দেয় হাসপাতাল কতৃপক্ষ আপাতত এই সেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা।
দীর্ঘ সময় ধরে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ থাকলেও সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলেও হয়নি এর কোন সুরাহা। হাসপাতালের কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে রোগী বহনে রোগী পর্যায়ে সীমিত ব্যয় হয়। কিন্তু বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্সের ক্ষেত্রে সেই ব্যয় আরও তিনগুন বাড়ে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকার জ্বালানি তেল ব্যয় হয় সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বাজেট শাখা থেকে বরাদ্দ আসে ১০ লাখ টাকা। মূলত ফিলিং স্টেশন থেকে বাৎসরিক চুক্তিতে জ্বালানি তেল কিনে এ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু রাখেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত অর্থ বছরে তেল বাবদ প্রায় ৯ লাখ টাকা বকেয়া পরলে চলতি অর্থবছরে ৩ লক্ষাধিক টাকার অধিক বকেয়া পরিশোধ করে এখন অর্থ সংকটে পড়ায় সরকারিভাবে এ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রায় ৮ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই সেবা।
সরজমিন সোমবার কয়েকজন রোগীর স্বজনেরা জানান, রোগীর মূমুর্ষ সময়ে সরকারি এ্যাম্বুলেন্স পাননি তারা। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্সে রোগীকে রাজবাড়ী এবং ফরিদপুর নিয়েছেন। এতে অর্থের সঙ্গে নষ্ট হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সময়।
মূলত ২০১০ সালে এই হাসপাতালটি ২০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ঢাকা খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত রোগী ও গোয়ালন্দ উপজেলার দেড় লাখ মানুষ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। অথচ এমন জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে এ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫০ জন রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হয়। অভ্যন্তরীণ ও জরুরি বিভাগ মিলিয়ে অন্তত প্রতিদিন দু`জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজবাড়ী সদর ও পার্শ্ববর্তী জেলা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সরকারি এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অনেক সময় রোগীর স্বজনেরা বাড়তি অর্থের সঙ্গে ভোগান্তিতে পড়েন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারসিম তারান্নুম হক এ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকারিভাবে তেলের বরাদ্দ না থাকায় বাধ্য হয়েই এ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। সংকট নিরসনে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা দাবি করেছেন। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবিহিত করেছেন বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :