ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের কুল চাষে ব্যাপক সাড়া জেগেছে চাষীদের মাঝে। শীত মৌসুমে প্রকার ভেদে টক মিষ্টি এই ফল ছোট বড় সকলের প্রিয় হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা থাকে অনেক বেশী। ভালুকা পৌর এলাকার রাস্তার মোড়ে মোড়ে, হাট বাজারে খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন পাত্রে বরই নিয়ে বসে রয়েছেন বিক্রির জন্য। নারী পুরুষ ছোট বড় সবাই যে যার চাহিদা অনুযায়ী পছন্দমত বরই কিনে নিচ্ছেন। তাছারা ফল ব্যবসায়ীদের দোকানেও বিভিন্ন জাতের বরই সাজানো রয়েছে।
ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামে বানিজ্যিক ভাবে মৌসুমী ফল বরই আবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৃষক সফিকুর রহমান রতন সরকার। বাজার মূল্য বেশী থাকায় ভাল লাভে বরই বিক্রি করতে পারছেন এলাকার বরই চাষীরা। ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া, উথুরা ও হবিরবাড়ী ইউনিয়নের আধা পাহাড়ি টেকটিলা এটেল মাটি হওয়ায় বরইসহ বিভিন্ন ফল গাছ যেমনি ভাল জন্মায় তেমনি ফলন বেশী ও সুস্বাদু হয়। মঙ্গলবার সরজমিন ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মাটি লাগুয়া ছোট বড় গাছগুলি বরইয়ের ভারে নুইয়ে রয়েছে। রোদ লেগে চিক চিক করা কাঁচাপাকা বরই গুলি দেখে জিবে মুচর দিয়ে উঠে। কয়েকজন শ্রমিক বাগান পরিচর্যার কাজ করছিলেন।
পাখি তাড়ানোর জন্য গোলাই হাতে এক কিশোর এদিক ওদিক ঘোরাফিরা করছিল। কথা হয় কৃষক রতন সরকারের সাথে। তিনি জানান নিজের অনাবাদী প্রায় ২ একর চালা জমিতে দেশী টক কুল, বল সুন্দরী ও থাই কুলের আবাদ করেছেন। তার আবাদ করা এক হাজারের উপরে গাছ রয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি গাছ কাঁচা পাকা বরইয়ে টই টুম্বর। ক্ষেত তৈরী,চারা ক্রয়, সার কীটনাশক, পানি সেচ ও শ্রমিক বাবদ এ পর্যন্ত ৪ লাখ টাকা খরচ করেছেন। বরইয়ের দাম বেশী হওয়ায় স্থানীয় বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বরই বিক্রি করেছেন। তিনি এ বছর ৪ লাখ টাকার বরই বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন।
তবে মৌসুম শুরু হওয়ায় যে পরিমানে বরই হারভেষ্ট হয় সে তুলনায় বাজারজাত করা কঠিন হয়ে যায়। দুর দুরান্তের পাইকার না আসায় স্থানীয় হাট হকারদের কাছে কম দামে বরই বিক্রি করতে বাধ্য হন তারা। ফলে উপযুক্ত বাজার মুল্য হতে বঞ্চিত হতে হয়। একই গ্রামে দেশী টক বরইয়ের আবাদ করে তাক লাগিয়েছেন আব্দুল মতিন মিয়া। তিনি জানান অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তাতে ১৮শ গাছ লাগিয়েছেন। সবগুলি গাছে প্রচুর ফলন হয়েছে। তিনি জানান মিষ্টি বরইয়ের চেয়ে টক বরইয়ের চাহিদা অনেক বেশী। টক বরই দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা নিয়ে যায়। এলাকায় বরই বাগান দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান হতে লোকজন এসে ভীড় জমায়। আর এই বাগান দেখে অনেকেই নতুন করে বরই চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :